হত্যার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে, বলছেন উপাধ্যক্ষের ভাই।
Published : 12 Mar 2025, 10:23 PM
রেলস্টেশনে পরিচয় হওয়া যে দম্পতিকে ফ্ল্যাটে এনেছিলেন হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভুঁইয়া, সেই দম্পতিই তাকে খুন করেছেন বলে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে তারা ‘স্বীকার করেছেন’।
পুলিশ বলছে, হত্যার কারণ হিসেবে ওই দম্পতির ভাষ্য, রাজধানীর উত্তরখানের বাসায় আশ্রয় নেওয়ার পর তারা সাইফুর রহমানের ‘শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের’ শিকার হন। সেই ক্ষোভ থেকে বটি দিয়ে কুপিয়ে তারা পালিয়ে যান।
তবে মামলার বাদী সাইফুর রহমানের ভাই লুৎফর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের কালিমা লেপন করা ঠিক নয়। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে, যার রহস্য উদঘাটন করা প্রয়োজন।”
সোমবার ভোরে উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয় তলা ভবনের চতুর্থ তলায় খুন হন উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
এ ঘটনায় তার ছোট ভাই লুৎফর রহমান মামলা করেন। উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় স্ত্রীর পৈত্রিক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণের জন্য তিন-চার মাস ধরে ওই এলাকার ভাড়া বাসায় থাকছিলেন বলে জানান লুৎফর।
হত্যাকাণ্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যে মঙ্গলবার সকালে ফরিদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে পুলিশ মো. নাজিম হোসেন (২১) ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতিকে (২৩) গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইলফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়।
বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ কমিশনার মহিদুল ইসলাম বলেন, হত্যায় জড়িত থাকার কথা ওই দম্পতি স্বীকার করেছেন। তবে তারা উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “গ্রেপ্তার দুজন বলছেন, ঘটনার দুই-তিন আগে কমলাপুর রেলস্টেশনে উপাধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে তাদের দুজনকে উপাধ্যক্ষ উত্তরখানের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। একপর্যায়ে জান্নাতিকে আটক করে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন করেন।
“তারা নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে অতিরিক্ত রাগ ও ক্ষোভ থেকে ধারালো বটি দিয়ে উপাধ্যক্ষ সাইফুর রহমানকে উপর্যুপরি আঘাত করে পালিয়ে যান। ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপাধ্যক্ষ সাইফুর রহমানের ভাই লুৎফর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ একটি বিষয় কৌশলে এড়িয়ে গেছে। আমার ভাই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি জিয়া শিশু অ্যাকাডেমি থেকে গত মাসে শিক্ষায় 'কমল পদক' পেয়েছেন। বাসায় উনারা (পুলিশ) এসব কাগজপত্র পেয়েছে।
“মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যেকোনো কিছু বলা যায়। এত সুন্দর যদি গল্পটা হত তাহলে ঢাকার একটা সিনেমা বানানো যায়। আমার ভাই কি করত না করত, আর ইতিহাস আছে তো।”
বিষয়টি নিয়ে তিনি শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনে আসবেন বলেও জানান লুৎফর রহমান।