দুজনের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক।
Published : 07 Oct 2024, 03:17 PM
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী রুকমীলা জামান ও পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে সোমবার ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন বলে দুদকের আদালত পরিদর্শক আমির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
যুক্তরাজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ও তার স্ত্রীর বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপ-পরিচালক রাম প্রসাদ মণ্ডল। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনারি করেন দুদকের সরকারী কৌঁসুলী মীর আহমেদ আলী সালাম।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, “বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে সাইফুজ্জামান চৌধুরী তার নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে যুক্তরাজ্যে ৩৫টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্যে ৯টি বাড়ি ও এপার্টমেন্টসহ অর্জন করেছেন। এছাড়া অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ দিয়ে তিনি বাংলাদেশেও সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।”
দুদক শঙ্কা, জাবেদ এবং তার স্ত্রী রুকমীলা জামান দেশত্যাগ করতে পারেন। তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।
অন্যদিকে, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে, গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগে চৌধুরী নাফিজ সরাফতের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান।
নাফিজ সরাফত কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে দুদকের আবেদনে অভিযোগ করা হয়। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করের দুদকের সরকারী কৌঁসুলী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পিএলসির মালিকানাতেও যুক্ত।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাফিজ সরাফাত গত এক দশকে হোটেল ব্যবসা, বিদ্যুৎ, মোবাইলের টাওয়ার, মিডিয়াসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসার বিস্তার ঘটিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের গত তিন মেয়াদে আর্থিক খাতের অনিয়মে বার বার নাম এলেও পার পেয়ে যান তিনি। ক্ষমতার পালাবদলের পর আরো অনেকের মত নাফিজ সরাফাতের দুর্নীতির বিষয়েও উদ্যোগী হয় সরকারি সংস্থাগুলো।
ব্যাংক দখল ও শেয়ারবাজার থেকে অর্থ লোপাটের মাধ্যমে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদক গত ১৬ অগাস্ট নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর কথা জানায়।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট- বিএফআইইউ ২৫ অগাস্ট নাফিজ সরাফাত এবং তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা সাহিদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।
বিভিন্ন অনিয়ম ও শেয়ার কেলেঙ্কারির অভিযোগে নাফিজ সরাফাতের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডিও আলাদাভাবে নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ তদন্ত শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।