যুক্তরাজ্যে সাবেক মন্ত্রীর ব্যবসা আছে এবং এটি তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন। বলেছেন, উত্তরাধিকার সূত্রে বাবার কাছ থেকে এই ব্যবসা পেয়েছেন তিনি।
Published : 18 Aug 2024, 10:46 PM
‘অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে’ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি।
রোববার দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুদকের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারে থাকার সময় এই বিষয়টি দুদক খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেয়নি। এখন কেন তারা এ বিষয়ে আগাচ্ছে- এই প্রশ্নে সচিব বলেন, “দুদক তার আইন ও বিধি অনুযায়ী চলে। আমাদের গোয়েন্দা উইং আছে। সেখান থেকে কার্যক্রম চলমান আছে। গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী এখন এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।”
গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল।
এর জবাবে কয়েক মাস পর আওয়ামী লীগ নেতা জানান, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু পাকিস্তান আমল থেকেই বিদেশে ব্যবসা করেন। তিনি সেই ব্যবসার উত্তরাধিকারী। যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সময়ও তিনি ব্যবসা করেছেন। যুক্তরাজ্যে তার আয়কর নথিও আছে।
গত ৯ মে সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে সম্পদের তথ্য অনুসন্ধান চেয়ে রিট আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।
‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে’ শিরোনামে দৈনিক সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি রিট আবেদনে সংযুক্ত করা হয়। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সাল থেকে সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন কোম্পানি যুক্তরাজ্যে প্রায় ২০ কোটি পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি কিনেছে।
যুক্তরাজ্যের কোম্পানি হাউস করপোরেট অ্যাকাউন্ট, বন্ধকি চার্জ এবং এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে এ পরিসংখ্যান পেয়েছে বাণিজ্য বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম।
সংবাদ মাধ্যমটি ২৫০টি সম্পত্তি বিশ্লেষণ করে দেখেছে প্রায় ৯০ শতাংশ নতুন অবস্থায় কেনা হয়।
হারুনের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ
হারুনের বিরুদ্ধে দুদকে জমা পড়া অভিযোগে বলা হয়, তিনি কিশোরগঞ্জে নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ নামে বিলাসবহুল প্রমোদাগার। জেলার মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৪০ একরেরও বেশি জায়গা নিয়ে রিসোর্টটি তৈরি করা হয়েছে।
রিসোর্টটিতে হারুনের পরিবারের ৫ থেকে ৭ একর জায়গা রয়েছে। বাকি অন্তত ৩৫ একর জায়গা ছিল অন্যদের। অন্য জমির মালিকদের দাম দেবেন বললেও অনেকেই জমির দাম পুরোটা পাননি বলে অভিযোগ পেয়েছে দুদক।
গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের এসপি থাকার সময় ‘প্রভাব খাটিয়ে’ হারুন তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে বাড়ির পাশের হাওরে জমি কিনতে শুরু করেন এবং নামে-বেনামে তার শতাধিক একর জমি রয়েছে। দেশের বাইরেও শত শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হারুন আর প্রকাশ্যে আসেননি।
আরও পড়ুন