“সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দেখেন যে, তার স্বাক্ষর জাল করে ওয়াসার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ভুয়া অনুমতিপত্র দেখিয়ে সেখানে রাস্তা খনন করছিল।"
Published : 08 Jul 2024, 09:22 PM
স্বাক্ষর ‘জাল’ করে ভুয়া অনুমতিপত্র দেখিয়ে রাস্তা খনন করার অভিযোগে ঢাকা ওয়াসার মালামাল জব্দ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের জানান, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের লালবাগ শহীদ আবদুল আলীম খেলার মাঠ সংলগ্ন রাস্তা খননের সময় সোমবার সেখান থেকে মালামালগুলো জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, অনুমতি না নিয়ে সেখানে রাস্তা খনন করছিল ঢাকা ওয়াসা। বিষয়টি নজরে এলে করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সেখানে যান এবং রাস্তা খননের অনুমতিপত্র দেখতে চান।
“তারা অনুমতিপত্র দেখায়। তখনই বেরিয়ে আসে ঢাকা ওয়াসার জালিয়াতি। সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দেখেন যে, তার স্বাক্ষর জাল করে ওয়াসার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ভুয়া অনুমতিপত্র দেখিয়ে সেখানে রাস্তা খনন করছিল।"
নাছের বলেন, "ততক্ষণে অবস্থা বেগতিক দেখে সেখান থেকে সটকে পড়েন খনন কাজে নিয়োজিত ঢাকা ওয়াসার কর্মী ও তদারকিতে থাকা লোকজন। পরে খনন কাজে ব্যবহৃত মালামাল জব্দ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।"
দুটি জেনারেটর, একটি ড্রিল মেশিন, দুটি অ্যালুমিনিয়াম বোল, দুটি শাবল, একটি কোদাল, একটি এলইডি লাইট ও পাঁচটি হেলমেট রয়েছে জব্দ করা মালামালের মধ্যে।
সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের আওতাধীন লালবাগ খেলার মাঠ (শহীদ আবদুল আলীম খেলার মাঠ) সংলগ্ন পানির মেইন লাইনে ইলেকট্রনিক প্রেশার রিডিউসিং ভালভ (ই-পিআরডি) স্থাপন কাজের জন্য সম্প্রতি রাস্তা খননের অনুমতি চায় ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। এসব অনুমতি দেওয়া হয় করপোরেশনের ওয়ান স্টপ সেল থেকে। গত ২১ এপ্রিল করপোরেশনের অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল স্বাক্ষরিত একটি অনুমতিপত্র ঢাকা ওয়াসার সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের (রক্ষণাবেক্ষণ) নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ মোস্তাকিম হোসেন বরাবরে পাঠানো হয়।
আবু নাছের জানান, অনুমতিপত্রে ২৪ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ওই রাস্তা খনন করার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে কাজ না করে ২৯ এপ্রিল তারিখে ২৩ মে পর্যন্ত খনন কাজের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ঢাকা ওয়াসা আবেদন করে।
কিন্তু ঈদ-উল-আযহা এবং জনভোগান্তির কথা বিবেচনা করে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ওয়াসাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়, ওই রাস্তা এখন খননের অনুমতি দেওয়া যাবে না।
এরপরও ঢাকা ওয়াসা রাস্তা খননের জন্য দুই বার উদ্যোগ নিলে সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী গত ২০ মে চিঠি দিয়ে বলেন, ওই রাস্তা এখন খনন করা যাবে না। কিন্তু সোমবার ওই প্রকৌশলীর কাছে খবর আসে, ওয়াসা অনুমতি ছাড়াই রাস্তা খনন করছে।
সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা ওয়াসা ১২.৪২ বর্গমিটার সড়ক খননের অনুমতি চেয়েছিল। ২১ এপ্রিল তাদের ওই পরিমাণ সড়ক খননেরই অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে এবং অনুমতি না নিয়ে ওয়াসা দুটি স্থানে ১৩.২৯ বর্গমিটার সড়ক খনন করে।
সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল বলেন, "যেহেতু আমার স্বাক্ষর জাল ও তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে, সেহেতু এ বিষয়ে আমরা যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। প্রয়োজনে মামলা করা হবে।"
অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।