“তারা ইট-পাথর মেরে লোকোমাস্টারের রুমের গ্লাস ভেঙে ফেলেছে। কয়েকটি কোচের গ্লাসও ভেঙে ফেলা হয়েছে,” বলছেন কমলাপুর স্টেশন মাস্টার।
Published : 07 Dec 2024, 04:47 PM
রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় দল বেঁধে একটি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। তাতে কয়েকটি কোচের জানালার কাঁচ ভাঙার ও কয়েকজন যাত্রী আহত হওয়ার খবর দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
শুক্রবার বেলা পৌনে ৫টায় কমলাপুর ছেড়ে আসা আন্তনগর ট্রেনে এই হামলা হয়।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মাহমুদুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার স্বজন ও এলাকার লোকজন ট্রেনে হামলা করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে আসা ৫৪ মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, কমলাপুর থেকে একটি ট্রেন ছেড়ে আসছে। আর খিলগাঁও রেলেগেটের ঠিক আগে রেললাইনের দুপাশে একদল লোক দাঁড়িয়ে আছে। ট্রেনটি কাছাকাছি আসতে তারা ওই ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে মারছে। ট্রেনটি ওই স্থান অতিক্রম করা পর্যন্ত পাথর নিক্ষেপ করে যাচ্ছিল তারা। তাদের বেশিরভাগই পাথর মেরেছে ট্রেনের জানলার কাঁচ লক্ষ্য করে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, লাল শার্ট পরা একজন ট্রেনের ইঞ্জিনে থাকা লোকোমাস্টারকে লক্ষ্য করে পাথর মেরেছেন। ট্রেনে পাথর মারার সময় সাদা এবং হলুদ পাঞ্জাবি পরা দুজন লোক দুপাশ থেকে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছেন। তবে তাদের থামানো যায়নি।
স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কমলাপুর থেকে জামালপুরের তারাকান্দিগামী আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছিল। খিলগাঁও যাওয়ার পর ওই ট্রেনে আক্রমণ করে এক দল লোক।
ঘটনার সময় খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় দায়িত্বে থাকা গেটম্যানদের বরাতে তিনি বলেন, তিন-চারদিন আগে খিলগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় এক যুবক আহত হয়। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রেললাইন কাছাকাছি হওয়ায় ওই ব্যক্তির এলাকার লোকজন ও স্বজনরা এসে রেললাইনে জড়ো হন।
স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান বলেন, “তারা ইট-পাথর মেরে লোকোমাস্টারের রুমের গ্লাস ভেঙে ফেলেছে। কয়েকটি কোচের গ্লাসও ভেঙে ফেলা হয়েছে। ওই ঘটনায় কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। ওই ঘটনায় রেলের কোনো সংশ্লিষ্টতাই নেই, তারপরও ট্রেনে হামলা করা হল।”
এ ঘটনায় কাউকে চিহ্নিত করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটা বলতে পারব না। বিষয়টি থানা দেখছে। যতদূর জানি, ঘটনার পর পুলিশ সেখানে গিয়েছিল, তারা এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে।”
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "বিষয়টি জিআরপি পুলিশকে জানিয়েছে রেলওয়ে। তারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে।"
কমলাপুর রেলওয়ে থানার ওসি জয়নাল আবেদীন শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রেলওয়ে এখনও এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এজন্য তারা আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেননি।
ওসি বলেন, “আমরা ঘটনাটি শুনেছি। আমরা আমাদের মতো ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের কাছে কমপ্লেইন দিলে ওটা ধরে আমরা তদন্ত শুরু করব।
“অফ দ্য রেকর্ড অনেক কিছুই আছে। কিন্তু আইন মোতাবেক তদন্ত করতে হলে একটা মামলা নিতে হবে। কমপ্লেইন না পেলে আমি কিভাবে আগাব।”
এর আগে ১৮ নভেম্বর ঢাকার মহাখালীতে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেদিন ট্রেন চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়।