“উৎসবকে অযথা সীমিত করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেবে না উদীচীসহ দেশের শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীরা,” বলেন হাবিবুল।
Published : 14 Apr 2024, 08:57 PM
বাংলা বর্ষবরণের আয়োজন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার যে নির্দেশনা সরকার দিয়েছিল তা না মানার ঘোষণা দিয়েই রেখেছিল বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সেই অনুযায়ী সংগঠনটি সন্ধ্যা ৬টা থেকে শাহবাগে ‘বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল' শিরোনামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে।
প্রজন্ম চত্বরে অনুষ্ঠানের শুরুতেই সময় সংকোচনসহ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি নাটিকা পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। এরপর একক সংগীত পরিবেশন করেন হাবিবুল আলম, হরেকৃষ্ণ দেবনাথ ও সাজেদা বেগম সাজু।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, “কয়েক বছর ধরেই বর্ষবরণ উৎসবকে নির্দিষ্ট সময়ের ঘেরাটোপে বেঁধে দেওয়ার একতরফা পদক্ষেপ নিয়ে আসছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও সারাদেশে আয়োজিত পহেলা বৈশাখের সব উন্মুক্ত অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
“কিন্তু উদীচী মনে করে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপনে হঠকারি সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কাছে নির্জলা আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুই নয়। এর মাধ্যমে পক্ষান্তরে আবহমান বাংলার সংস্কৃতিবিরোধী অন্ধকারের শক্তিকেই আশকারা দেওয়া হচ্ছে। এধরনের অযাচিত সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।"
এবার খোলা জায়গায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে বর্ষবরণের সব আয়োজন বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে বলেছিল।
এর প্রতিবাদে পহেলা বৈশাখের সন্ধ্যায় ‘বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল' শিরোনামে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় জানিয়ে অমিত বলেন, সারাদেশে উদীচীর আয়োজনে সমমনা সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে যে বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ উৎসব হয় তাও যথানিয়মেই আয়োজন করা হয়।
পহেলা বৈশাখের দিন বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনের অনুষ্ঠান শেষ করার সরকার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হয় উদীচীর অনুষ্ঠান। রোববার সন্ধ্যায় শাহবাগে অনুষ্ঠান আয়োজন করে উদীচী।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি হাবিবুল আলম বলেন, “পহেলা বৈশাখ আবহমান বাংলার এক অনন্য অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এ উৎসবকে অযথা সীমিত করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেবে না উদীচীসহ দেশের শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীরা।
“তাই এর প্রতিবাদে বারবারই গান, নাচ, নাটকের মতো সৃজনশীল হাতিয়ার নিয়ে মাঠে নামবে উদীচী।"