সংসদ ভবন এলাকায় ঘুরে বেড়াতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় অনেককে।
Published : 06 Aug 2024, 01:17 PM
চন্দ্রিমা উদ্যানে মঙ্গলবার সকালে হাঁটতে এসেছিলেন পঞ্চাষোর্ধ হামিদা বেগম। গণভবনে প্রবেশ উন্মুক্ত দেখে কৌতূহলী হয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন তিনি। তবে একদম ভেতরের কক্ষগুলোতে যেতে পারেননি। গণভবনের ভেতরের মাঠেই হেঁটে বেরিয়েছেন।
হামিদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গণভবনের ভেতরটা তো কোনোদিন দেখি নাই। এজন্যই গিয়েছিলাম। তবে আর্মিরা ভবনের ভেতরে যাইতে দেয় নাই।”
মঙ্গলবার সকালেও গণভবনের সামনে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা যায়। সকাল ৯টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে থাকা লোকদের বাইরে বেরিয়ে আসতে অনুরোধ করছেন সেনা সদস্যরা।
আর মূল গেইটের সামনে থাকা কেউ কেউ আবার সেনা সদস্যদের অনুরোধ করছেন- ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেনা সদস্যরা নতুন করে আর কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। গেইটে দাঁড়িয়েই ছবি তুলছেন কেউ কেউ।
উৎসুক জনতার ভিড় ছিল জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণেও। গণভবনের পাশ দিয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশের ভিআইপি সড়ক দিয়ে রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল নিয়েও অনেকে সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে প্রবেশ করছেন। কেউবা ছবিও তুলছেন।
সড়কের মুখে থাকা ভিআইপি সাইনবোর্ডের লেখাগুলো কালি দিয়ে মুছে ফেলা হয়েছে। এই সড়কটি মূলত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের সংসদে প্রবেশের পথ।
বেলা পৌনে ১০টায় সেখানে দেখা যায়, সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে প্রবেশ উন্মুক্ত থাকলেও মূল ভবন পাহারায় রয়েছেন সেনা সদস্যরা। তারা ভবনের ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। তবে ভবনের বাইরের খোলা প্রাঙ্গণ ও লেকের পাশ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করছেন লোকজন। কেউ কেউ লেকের পাশে বসে এবং ভবনের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলছেন।
স্কুল পোশাক পরিহিত অনেককেও দেখা যায় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে ঘুরে বেড়াতে। সংসদ ভবনের উত্তর দিকের বিজয় সরণির পাশের লেকে কয়েকজনকে গোসল করতেও দেখা যায়।
স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বাইকে করে এসেছেন গোলাম রাব্বানী নামের একজন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল টিভিতে দেখছি গণভবনের ভেতরে মানুষ। কিন্তু মারামারি হয় কি না- এই ভয়ে আসি নাই। পরে মনে মনে আফসোস হইছে। এজন্যই আজকে সকাল সকাল আসছি।
“এসব জায়গায় তো অন্য সময় আসতে পারুম না। আজকে গণভবনের ভেতরেও গেছিলাম। সংসদ ভবনও দেখলাম। ভবনের ভেতরে যাইতে পারলাম না।”
রাব্বানীর সঙ্গে আলাপচারিতার সময় অদূরে থাকা একজনকে মোবাইল ফোনে বলতে শোনা যায়, “তাড়াতাড়ি আয় ব্যাটা, অহনও খোলা আছে। ঢুকতে পারবি।”
সংসদ ভবন এলাকায় ঘুরে বেড়াতে পেরে উৎফুল্ল দেখা যায় অনেককে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনা সদস্যরা। সকাল ১০টায় সরেজমিনে দেখা যায়- মূল গেইটের সামনে কয়েকজন সেনা সদস্য পাহারা দিচ্ছেন। গেইটের ভেতরেও সেনাবাহিনীর গাড়ি রয়েছে। লোকজনকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
কেউ কেউ সেনা সদস্যদের অনুরোধ করে গেইটে দাঁড়িয়েই ছবি তুলছেন। গেইট দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে দেখা যায়, বাইরে সোফা-সেটসহ বিভিন্ন মালামাল খোলা জায়গায় পড়ে রয়েছে। তবে মূল গেইট তালাবদ্ধ।