দণ্ডিত সোহেল রানা ২০২৩ সালে রাজধানীর উত্তরার ডাচ বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ডাকাতির মামলারও চার্জশিটভুক্ত আসামি।
Published : 10 Apr 2025, 03:48 PM
প্রায় এক দশক আগে টাকা-পয়সার লেনদেনকে কেন্দ্র করে সদরঘাটের কাপড় ব্যবসায়ী কামরুল হাসানকে হত্যার দায়ে এক দম্পতিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আসামি সোহেল রানা এবং তার স্ত্রী রুমা আক্তার সুমনাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া হত্যার পর লাশ গুমের দায়ে তাদের আরও তিন বছর করে কারাদণ্ড, তিন হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও এক মাস করে বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে তাদের।
রায় ঘোষণার আগে জামিনে থাকা দুই আসামি আদালতে হাজির হন। রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
দণ্ডিত সোহেল রানা ২০২৩ সালে রাজধানীর উত্তরার ডাচ বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ডাকাতির মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।
এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ভিকটিম তাদের কাছে আড়াই লাখ টাকা পেত। টাকা যেন না দিতে হয় এজন্য তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।'
মামলার বিবরণে জানা যায়, ব্যবসায়ী কামরুল হাসানকে অনেক খুঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে তার খালা অ্যাডভোকেট রেহেনা পারভীন ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার হাকিম আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি পল্টন থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
পল্টন থানা পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তাতে নারাজি দেন রেহানা পারভীন। আদালত তখন মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক হারুনর রশীদ তদন্ত শেষে দুইজনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সেই তদন্তে কামরুল হাসানকে খুন করে লাশ গুমের তথ্য ওঠে আসে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ভিকটিমের লাশ খণ্ডখণ্ড করে বস্তায় ভরে বিলের মধ্যে ফেলে দেন দুই আসামি।
২০১৮ সালের ৫ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযাগ গঠন করে আদালত। মামলার বিচার চলাকালে ১৪ জনের সাক্ষ্য শুনে বৃহস্পতিবার সোহেল রানা ও সুমনাকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিল আদালত।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী রেহানা পারভীন বলেন, উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে বলে তিনি আশা করছেন।