“গত তিন নির্বাচনও পর্যালোচনা করছি আমরা; সাবেক তিন কমিশনারের ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি,” বলেন তিনি।
Published : 21 Nov 2024, 07:07 PM
আগের তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাবের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদারের কণ্ঠে শোনা গেল সংশয়ের সুর।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ভবনে গণমাধ্যমের সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বদিউল আলম। সেখানে গত তিন নির্বাচন নিয়ে তখনকার সিইসিদের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব তোলেন বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা।
মতবিনিময়ের পর ব্রিফিংয়ে ওই বিষয়ে কথা বলেন বদিউল আলম মজুমদার। সেসময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয় সংস্কার কমিশন সাবেক তিন সিইসিকে ডাকবে কিনা।
জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “উনারা কি আসবেন? আমার তো মনে হয় না। ওকে দেখা যাক, আমরা বিবেচনায় নেব।”
নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময়ে আওয়ামী লীগের সময়ে তিনটি নির্বাচনে প্রকৃত তথ্য জানতে এবং নির্বাচনগুলোতে অনিয়মকারীদের শাস্তির বিধান করাসহ কয়েকটি প্রস্তাব করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা।
বৈঠকের পর ওই বিষয়ে বদিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আগের তিন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে ‘অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ তৈরি করতে বলেছেন সম্পাদকদের।
তিনি বলেন, “গত তিন নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলে, তাদের কাছে জানতে যে কী হয়েছে? তারা কেন করতে (সুষ্ঠু নির্বাচন) পারে নাই? এ নিয়ে রিপোর্ট করতে বলেছি।”
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে তিনটি জাতীয় নির্বাচন হয়। এর মধ্যে দশম ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ও মিত্র দলগুলো।
২০১৪ সালের নির্বাচনে সিইসি ছিলেন কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে কে এম নূরুল হুদা, আর ২০২৪ সালের নির্বাচনে সিইসি ছিলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সম্পাদক আর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে নির্বাচনী অপরাধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের। বিষয়টি নিয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনি অপরাধগুলো কী হবে, কাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে, আর এসব অপরাধ যেন ভবিষ্যতে না ঘটে সে বিষয় তারা পর্যালোচনা করছেন।
“গত তিন নির্বাচনও পর্যালোচনা করছি আমরা, সাবেক তিন কমিশনারের ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। অবশ্যই সুপারিশ করা হবে শাস্তির বিধানগুলোকে ভিন্নভাবে বিন্যাস করার। ওখানে আইনের জটিলতা থাকতে পারে, কিন্তু প্রস্তাব থাকবে।”
সম্পাদক আর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে নির্বাচন কমিশনারদের ‘আত্মসম্মানবোধ’, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোট (যা ‘ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে’ অথবা তিনটি আসন মিলিয়ে একটি নারী আসন করা যেতে পারে), অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন, গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা, স্থানীয় সরকার নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নেওয়া, অনাবাসী কেউ প্রার্থী হতে পারবে না, রাষ্ট্রীয় খরচে নির্বাচনি প্রচারের ব্যবস্থা, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগ, জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভোটার কার্ড হিসেবে বিবেচনা করা এবং সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়।
সুপারিশগুলোর বিষয়ে বদিউল আলম বলেন, “উনারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছেন আমাদেরকে। আমরাও চিন্তাভাবনা করছি। সময় আসলেই দেখবেন।
“আমরা যে বিষয়গুলো ভাবছি, উনারা সে বিষয়গুলোর ওপরই জোর দিয়েছেন; আমার মনে হয়, আমরা সঠিক পথেই আছি।”
পুরনো খবর
রকিব, হুদা ও আউয়াল কমিশনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা
আওয়ামী লীগের মত নেবেন না? বদিউলের জবাব, 'সরকারের অভিপ্রায় গুরুত্ব