অর্থপাচারের মূল গন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড উল্লেখযোগ্য বলে জানান।
Published : 01 Oct 2024, 09:12 PM
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়ার অর্থ উদ্ধার ও তথ্য সংগ্রহে সহায়তা চেয়ে বিভিন্ন দেশে ৭১টি চিঠি (এমএলএআর) পাঠিয়ে ২৭টির জবাব পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক।
বিদেশে অর্থ ও সম্পদ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান এবং মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মাধ্যমে এমএলএআর (মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স রিকোয়েস্ট) পাঠিয়ে তথ্য ও রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে দুদক।
মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দুদক কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়। সভার বিষয়বস্তু জানাতে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সেখানে এমএলএআর বিষয়ক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “দালিলিক প্রমাণাদি সংগ্রহের জন্য আমরা যে বিদেশি সংস্থা রয়েছে, যেসব দেশে টাকা পাচার হয়েছে, সেসব দালিলিক প্রমাণাদির জন্য আমরা মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠিয়েছি।
“সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে আমরা আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে সদুত্তর পাইনি। দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমরা মাত্র ২৭টি এমএলএআরের উত্তর পেয়েছি।”
অর্থপাচারের মূল গন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড উল্লেখযোগ্য বলে জানান।
মঙ্গলবার বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কো-অপারেশন বিভাগের প্রধান মিশেল ক্রেজা, প্রোগ্রাম ম্যানেজার পাবলো প্যাডিন পেরেজ, নাদের তানজা এবং কিশওয়ার আমিনের সমন্বয়ে একটি দল দুদকে বৈঠক করে।
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন, দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন, পরিচালক আবদুল্লাহ আল জাহিদ ও গোলাম শাহরিয়ারের সমন্বয়ে একটি টিম সংস্থাটির পক্ষে বৈঠকে অংশ নেয়।
বৈঠকে দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করা হয়।
এছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও পাচারকৃত সম্পদ পুনরুদ্ধারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইইউ প্রতিনিধি দল তাদের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, “দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সে বিষয়টি আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সামনে উপস্থাপন করেছি। যেসব দেশে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে, সে অর্থ ফিরিয়ে আনতে তারা যাতে সহযোগিতা করে সে বিষয়টি আমরা তাদের বলেছি।
“বৈঠকে আমরা যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়েছে সেই দেশগুলোর নাম উল্লেখ করেছি, আশা করছি ওইসব দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা আশা করছি তাদের মাধ্যমে ইইউভুক্ত এবং এর বাইরে যে দেশগুলো রয়েছে, সেসব দেশ থেকে সহযোগিতা পাব।”
এর আগে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই, ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস ফর ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি), বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে দুদকের বৈঠক হয়েছে।