ঢাকায় ‘সুলভ মূল্যে’ দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন

“সাধারণ মানুষদের কথা বিবেচনা করে এবার দুধের আধা লিটারের ছোট প্যাকেট, অল্পপরিমাণ ডিম এবং আধা কেজির মাংসের প্যাকেট রাখা হবে,” বলেন শ ম রেজাউল করিম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2023, 03:50 PM
Updated : 23 March 2023, 03:50 PM

রোজার মাসে ঢাকায় ‘সুলভ মূল্যে’ দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির ভ্রাম্যমাণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। 

বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে তিনি এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। 

ঢাকার ২০টি স্থানে ১ রোজা থেকে ২৮ রোজা পর্যন্ত এসব পণ্য মিলবে জানিয়ে অনুষ্ঠানে শ ম রেজাউল করিম বলেন, "মানুষ যেন তার সাধ্যের মধ্যে দুধ, ডিম ও মাংস কিনতে পারেন, সেজন্য সরকার ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম চালু করছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয সর্বপ্রথম করোনায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় ব্যবস্থা চালু করে খামারি ও ভোক্তাদের উপকার করেছে, অর্থনীতি সচল রেখেছে, যারা বিপণনের সাথে বিভিন্নভাবে যুক্ত, তাদের সহায়তা করেছে। সে ধারাবাহিকতায় রমজানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। 

"মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিপণন কার্যক্রমের মন্ত্রণালয় নয়। এই মন্ত্রণালয় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী। দাপ্তরিক ম্যান্ডেট না হলেও আমরা মানুষের উপকারার্থে এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।” 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, "এ বছর প্রাথমিকভাবে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হবে। তবে আমরা যে দাম ধার্য করেছি, এটা নির্ধারিত নয়। প্রাথমিকভাবে উৎপাদকদের সাথে বসে ডিমের দাম নির্ধারণে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রমজানে পর্যায়ক্রমে আশা করি এটা আরও কমে আসবে।”

সচিবালয় সংলগ্ন আব্দুল গণি রোড, খামারবাড়ি, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি, মিরপুর ৬০ ফুট রাস্তা, আজিমপুর মাতৃসদন, পুরান ঢাকার নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুন বাজার, মিরপুরের কালশী, খিলগাঁও রেলগেইট, নাখালপাড়ার লুকাস মোড়, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুরের বসিলা, উত্তরার দিয়াবাড়ি, যাত্রাবাড়ী, গাবতলী, হাজারীবাগ, বনানীর কড়াইল বস্তি, কামরাঙ্গীরচর ও রামপুরায় এ কার্যক্রম চালু থাকবে। 

রেজাউল করিম বলেন, "সাধারণ মানুষদের কথা বিবেচনা করে এবার দুধের আধা লিটারের ছোট প্যাকেট, অল্পপরিমাণ ডিম এবং আধা কেজির মাংসের প্যাকেট রাখা হবে, যাতে একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষও তার সাধ্যের ভেতর এসব পণ্য কিনতে পারেন। 

“আমাদের লক্ষ্য সচ্ছল মানুষরা নয়। যে মানুষরা তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের মানুষ, সে মানুষদের পাশে শেখ হাসিনা সরকার দাঁড়াতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় রমজান মাসে মানুষকে সাহায্য করতে, তাদের কষ্ট লাঘব করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।”

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, "পৃথিবীর অনেক দেশে রমজানে মানুষ উদারচিত্তে মানুষকে সাহায্য করে, আর আমাদের কিছু অতি মুনাফালোভী ব্যক্তিরা রমজানে মানুষকে কষ্ট দেয়, ভেজাল দিতে চায়। এদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। 

“যেখানে অন্যায় হবে, যেখানে খারাপ খাবার সরবরাহ করা হবে, মানসম্মত পণ্যের পরিবর্তে ভেজাল দেওয়া হবে, যেখানে অতিরিক্ত দাম নেয়া হবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।"

উৎপাদক ও বিপণনকারীদের মাঝখানে একটি মধ্যস্বত্বভোগী মহল কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রশাসন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে। উৎপাদনের সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত লাভের বাইরে যারা অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে, অতিরিক্ত মুনাফার জন্য মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট, ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। আশা করি, মানুষের সহনশীল মূল্যে এসব পণ্য বিপণনে আমরা সহযোগিতা করতে পারব।

"যারা অতিরিক্ত লাভ করতে চায়, তারা অতিরিক্ত মূল্য নেয়। দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিপণনে সরকার কোনো লাভ করছে না, কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না। কোনো ভর্তুকি না দিয়ে রমজানে যে দামে সরকার বিক্রি করতে পারছে, সে দামে বিক্রি করার মত ব্যবসায়ীদেরও যৌক্তিক অবস্থা রয়েছে।"

Also Read: রোজায় ঢাকার ২০ স্থানে দুধ, ডিম ও মাংস মিলবে ‘সুলভ মূল্যে’

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান হোসেন, ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স-বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাসান, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম।