বৈধ কাগজপত্র না নিয়ে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ এবং নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি দিন অবস্থান করার অভিযোগে মামলা হচ্ছে।
Published : 08 Jun 2024, 09:42 PM
বিদেশি শ্রমিক হিসেবে কাজের বৈধ কাগজপত্র না থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২৩ বাংলাদেশিকে।
দেশটির জোহোর প্রদেশের প্রধান শহর জোহোর বারুর অদূরে শ্রমিকদের দুটি থাকার জায়গায় শুক্রবার মধ্যরাত ও ভোরে অভিযান চালায় প্রদেশের অভিবাসন বিভাগ। দুটি স্থান থেকে বাংলাদেশিসহ মোট ২১৪ জন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করার খবর প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার।
এটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বারুর কাছে কামপাং বেলেকক ও জালান কিংকারানা দালামের দুটি এলাকায় পুলিশসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সহায়তায় অভিবাসন বিভাগ অভিযান চালায়।
কর্মকর্তাদের বরাতে স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে বৈধ কাগজপত্র না নিয়ে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ এবং নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি দিন দেশটিতে অবস্থান করার অভিযোগে মামলা হচ্ছে। এখন তাদের সবার বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে।
দ্য স্টারকে অভিবাসন বিভাগের উপ-মহাপরিচালক (অপারেশনস) জাফরি এমবুক তাহা বলেছেন, পুলিশ ও বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা মিলে ১৪০ জনের একটি দল শুক্রবার মধ্যরাতে কামপং বেলেককে প্রথম অভিযানটি পরিচালনা করে।
কাগজপত্রহীন বিদেশি শ্রমিকদের থাকতে দেওয়ার অভিযোগে সেখান থেকে স্থানীয় দুই মালয়েশীয়কেও গ্রেপ্তারের কথা বলেছেন তিনি।
“কামপং বেলেককের ওই এলাকায় ‘অবৈধ’ অভিবাসীদের থাকার গোপন তথ্য পাওয়ার পর অভিযান চালানো হয়েছে। তবে তার আগে বিভাগীয় কর্মকর্তা ও ড্রোনের সাহায্যে দুই সপ্তাহ নজরদারি করা হয়েছে।
“অভিযানের সময় ২৫২ জনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয় এবং তাদের মধ্যে ৯২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৫৩ জন বাংলাদেশি, ৩০ জন চীনা, চারজন করে ভারতীয় ও ইন্দোনেশীয় ও একজন পাকিস্তানি।”
জাফরি এমবুক বলেন, গ্রেপ্তারদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তাদের যেখানে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেটির ৫০০ মিটার দূরে নির্মাণ কাজ চলছে। তারা সেখানে কাজ করতেন।
“আমাদের ধারণা, কন্সট্রাকশন সাইটের কাজ চলমান থাকায় শ্রমিকদের এই থাকার জায়গাটি প্রায় এক বছর ধরে চলছে।”
জোহোর অভিবাসন বিভাগের এ কর্মকর্তা বলেন, বারু শহরের পাশে ডাঙ্গা সিটি মলের কিছুটা দূরে দ্বিতীয় অভিযানটি চালানো হয় শুক্রবার ভোরে। এটিও স্থানীয়দের কাছ থেকে গোপন তথ্য পাওয়ার পর দুই সপ্তাহ নজরদারি করে পরিচালনা করা হয়েছে।
“দ্বিতীয় এ অভিযানে ৭২৫ জনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়, যার মধ্যে বিভিন্ন ধারায় অভিবাসন লঙ্ঘন করায় ১২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের সবার বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তাদের সঙ্গে ৩৫ বছর বয়সী স্থানীয় একজন মালয়েশীয়কে গ্রেপ্তার করা হয়।
“দ্বিতীয় অভিযানে গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৭০ জন বাংলাদেশি, ৩১ জন ইন্দোনেশীয়, ২০ জন মিয়ানমারের নাগরিক ও একজন পাকিস্তানি।”
জাফরি এমবুক দ্য স্টারকে বলেছেন, অভিযান পরিচালনাকারী দল আরও এমন একজনকে গ্রেপ্তার করেছে, যার কাছে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এর কার্ড পাওয়া গেছে। তিনি মিয়ানমার থেকে এসেছেন বলে দাবি করেন। তবে তার বৃত্তান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি আসলে বাংলাদেশের নাগরিক।
“গ্রেপ্তারদের অভিবাসন বিভাগের সদর দপ্তর জোহোর বারুর সেতিয়া ত্রোপিকায় নেওয়া হয়েছে, সেখানে তাদের নাম-ধাম, পরিচয় নথিভুক্ত করা হবে। অবশ্য তাদের মধ্যে কেউ কেউ অভিযানের সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছে।”