গেল ৫ অগাস্ট দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খোকন চন্দ্র বর্মণ।
Published : 20 Feb 2025, 06:18 PM
জুলাই আন্দোলন চলাকালে গুরুতর আহত হওয়া খোকন চন্দ্র বর্মণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার ভোরে তাকে রাশিয়ার উদ্দেশে পাঠানো হবে।
গেল ৫ অগাস্ট দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খোকন চন্দ্র বর্মণ। গুলির আঘাতে তার মুখের একটি বড় অংশ হাড়সহ নষ্ট হয়ে যায়।
খোকনের ওপরের ঠোঁট, মাড়ি, নাক, তালু– এগুলোর এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই, বিকৃত হয়ে গেছে তার পুরো মুখ। এমনকি চেহারা দেখেও এখন আর তাকে শনাক্ত করার উপায় নেই।
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আঘাতের ধরণ গুরুতর এবং আহত খোকনের মুখ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল হওয়ায় তার চিকিৎসার ব্যাপারে বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করা হয়। দীর্ঘ চেষ্টার পর এ বিষয়ে দক্ষ রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক অব লোমোনোসোভ হাসপাতাল তার মুখ পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জটি নিতে সম্মত হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাশিয়ায় প্রশিক্ষিত সার্জন ডাক্তার মো. মাহমুদুল হাসানসহ খোকন চন্দ্র বর্মণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়ায় পাঠানো হচ্ছে।
তাকে প্রাথমিকভাবে মস্কোর হাসপাতালে প্রাক মূল্যায়ন করা হবে। একইসঙ্গে থ্রি-ডি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তার চেহারাকে আগের অবস্থায় ফেরত আনার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি মডেল দাঁড় করানো হবে।
মডেল অনুযায়ী তার চেহারা পুনর্গঠনের জন্য মূল সার্জারি মার্চের ২০ তারিখ বা তার কাছাকাছি সময়ে শুরু হবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
মন্ত্রণালয় বলছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড অব্যাহত আছে, সে ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে ৩৮ জন আহতকে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
আহতদের মধ্যে ৩ জন চিকিৎসা শেষে ফিরে এসেছেন বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। এছাড়া বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আহতদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন, তাদের বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে।
মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, জুলাই আন্দোলনে আহত ১৪ হাজারের বেশি ছাত্র-জনতাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ছয়টি দেশ (থাইল্যান্ড, চীন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর) থেকে আসা বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা হাজারের বেশি আহতদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল্যায়ন করেছেন।
ক্ষেত্রবিশেষে তারা আন্দোলনে আহতদের সার্জারি করেছেন বলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য।