“আমার বিশ্বাস, এখন যদি আদানি শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ বিক্রি করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অনুমোদন নিতে হবে”, বলেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
Published : 23 Dec 2024, 01:52 AM
বাংলাদেশে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার পর এখন গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ শ্রীলঙ্কার মত প্রতিবেশী দেশে বিক্রির উপায় খুঁজছে আদানি পাওয়ার; তবে এজন্যও নির্ভর করতে হবে ঢাকার সিদ্ধান্তের ওপর।
শুধু বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য ঝাড়খণ্ডে নির্মিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহারের জন্য আদানি পাওয়ার এখন সেই চেষ্টা করছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
রোববার দ্য হিন্দু বিজনেস লাইনের খবরে বলা হয়েছে, আদানি পাওয়ারকে এ চেষ্টায় সফল হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
আদানি পাওয়ারের গড্ডা বিদ্যুৎকন্দ্রটির সক্ষমতা ১৬০০ মেগাওয়াট। কয়লাভিত্তিক এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি করে ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন এ কোম্পানি।
বিজনেস লাইনের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ ক্ষমতার পালাবদলে চাপে পড়ে আদানি পাওয়ারের গড্ডা বিদ্যুৎ প্রকল্প। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সম্প্রতি গড্ডার মত স্থায়ী কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ স্থানীয় বাজারে বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার।
তবে সরকারের সমর্থন মিললেও স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে হলে আদানিকে নতুন করে সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করতে হবে। বর্তমানে তাদের সঞ্চালনব্যবস্থার মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শ্রীলঙ্কার কাছে বিদ্যুৎ বিক্রির ক্ষেত্রে ভারত সরকার আদানির জন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়। বরং বাংলাদেশের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়াটাই তাদের জন্য কঠিন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে উদ্ধৃতি করে বিজনেস লাইন লিখেছে, “চুক্তি অনুযায়ী গড্ডার প্রকল্প শুধু বাংলাদেশেই সরবরাহ করার কথা। আমার বিশ্বাস, এখন যদি আদানি তা শ্রীলঙ্কায় বিক্রি করতে চায়, তাহলে তাদেরকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।”
এ অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে কি না, তা ইমেইলের মাধ্যমে আদানি গ্রুপের কাছে জানতে চেয়েছিল বিজনেস লাইন। কিন্তু কোনো সাড়া পায়নি।
বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বাংলাদেশের কাছে আদানির মোটা অঙ্কের পাওনা রয়েছে, যা বাড়ছে। প্রতিশ্রুত সময়ে এ পাওনা না পেয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে কোম্পানিটি।
আদানি গ্রুপের একাধিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বিজনেস লাইনের খবরে বলা হয়, তারা এখন স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার মতো কোনো প্রতিবেশী দেশে গড্ডার বিদ্যুৎ বিক্রি করতে চাইছে। ইন্ডিয়ান এনার্জি এক্সচেইঞ্জের কাছেও বিদ্যুৎ বিক্রির চিন্তা রয়েছে তাদের।
ভারতের বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলেছে, “শ্রীলঙ্কায় বিক্রি করতে চাইলে ভারত সরকার কোনো বাধা নয়। কারণ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ঝাড়খণ্ডের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার ’অসম চুক্তি’ নিয়ে সমালোচনার বিষয়টি সামনে আসে।
অন্তর্বর্তী সরকার আদানি, সামিট ও বেক্সিমকোসহ ১১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি পর্যালোচনা শুরু করে। এর মধ্যে গড্ডার বিদ্যুৎকেন্দ্রও আছে।