মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণ অভিযান এবং অবৈধ জাল ও মাছ ধরার সরঞ্জামের ব্যবহার বন্ধে অভিযান জোরদার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, বলেন তিনি।
Published : 18 Feb 2025, 06:05 PM
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর অবস্থানের মধ্যে গবাদিপশু চোরাচালান বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ডিসিদের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে তুলে ধরেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদার আখতার।
একই সঙ্গে গবাদিপশুর হাট ব্যবস্থাপনায় চাঁদাবাজি ও ছিনতাই প্রতিরোধে কঠোর নজরদারির জন্য ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় অধিবেশনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আলোচনা শেষে ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন উপদেষ্টা।
ক্ষমতার পালাবদলের পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিভিন্ন সময় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, সীমান্ত হত্যা দুই দেশের মধ্যে ‘ভালো সম্পর্কের অন্তরায়’।
সোমবার দিল্লিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ে সম্মেলন শুরু হয়েছে, যেখানে সীমান্ত হত্যা, মাদক-অস্ত্রসহ নিষিদ্ধ দ্রব্য চোরাচালান বন্ধ, অনুপ্রবেশ রোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
ডিসি সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আলোচনার বিষয়ে ফরিদা আখতার বলেন, “সীমান্তবর্তী এলাকায় গবাদিপশু চোরাচালান বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলেছি।”
এছাড়া উপজেলা পরিষদের বাজেটে প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য নির্দিষ্ট বরাদ্দ নিশ্চিত করা, জেলা ও পৌরসভায় সরকারিভাবে নির্মিত আধুনিক কসাইখানা ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, প্রাণিসম্পদের রোগ প্রতিরোধ ও নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিতকরণে আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন, কোরবানির হাট ব্যবস্থাপনায় ভেটেরিনারি টিমকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া ও হাটে প্রাণিকল্যাণ আইন মানা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে বলে তুলে ধরেছে তিনি।
গবাদিপশু পালনকারীদের কৃষি ঋণ সুবিধার আওতায় আনা, রমজানে সুলভ মূল্যে মাংস-ডিম-দুধ বিক্রয় কার্যক্রমে সহায়তা বিষয়ে ডিসিদের নির্দেশনার কথাও তুলে ধরেছেন উপদেষ্টা।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্ট’ অনুসরণ করে প্রাণিজাত পণ্য পরিবহণ ও বিপণন নিশ্চিতে নজরদারির পাশাপাশি কৃষি জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহারে পরিবেশবান্ধব সমন্বিত ব্যবস্থাপনা গ্রহণে নজরদারি জন্য ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপকূলীয় অঞ্চলে নতুন জেগে উঠা চরের জমি মহিষের বাথান ও চারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহারের জন্য ইজারা দেওয়া, দুর্যোগে গবাদিপশুর আশ্রয়ের জন্য পর্যাপ্ত গোমাঠ, উঁচু মাটির ঢিবি টিলা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে তুলে ধরে তিনি।
মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণ অভিযান এবং অবৈধ জাল ও মাছ ধরার সরঞ্জামের ব্যবহার বন্ধে অভিযান জোরদার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তুলে ধরেছেন উপদেষ্টা।
জলাশয় পুনঃখনন, অভয়াশ্রম ও বিল নার্সারি স্থাপনে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সক্রিয় অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, জাল যার জলা তার’- এ নীতি অনুসরণ করে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা যাতে সরকারি জলমহাল ইজারা পান সে ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেছেন তিনি।
হাওর অঞ্চলে প্রজননকালে এক মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন তুলে ধরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ এ শাস্তির পরিমাণ সংশোধনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যাতে শাস্তি আরোপ করতে পারেন সেভাবে সংশোধন করা হচ্ছে।