“প্রবলেম সলভিং ভিডিও হতে হবে। অসুস্থ হলে কিংবা হারিয়ে গেলে করণীয় কী, এমন ভিডিও দেখালে হজযাত্রীরা মনোবল পাবেন; প্রস্তুত থাকতে পারবেন।"
Published : 25 Feb 2025, 09:07 PM
হজযাত্রা সহজ, সুন্দর ও নিরাপদ করতে হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার চালু করে হজযাত্রীদের ‘সার্বক্ষণিক’ সেবার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনায়' হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সভায় ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “হজ পালন সহজ করতে আল্লাহ আমাদের সবাইকে একটা সুযোগ দিয়েছেন; এই সুযোগ যেন আমরা সর্বোচ্চ কাজে লাগাই। একজন হজযাত্রীও যেন কোনো ধরনের ভোগান্তির শিকার না হন, সে প্রচেষ্টা থাকতে হবে।”
হজ এজেন্সির দায়িত্ব কী হবে, সেটি স্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করে বুকলেট আকারে ও অনলাইনে প্রকাশের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “সরকারের দায়িত্ব হল এজেন্সিগুলোর দায়িত্ব পালন যেন সঠিকভাবে হয়, তা নিশ্চিত করা; দায়িত্ব পালন না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
“পুরো হজ প্রক্রিয়া হতে হবে সহজ ও স্পষ্ট। সরকারের দায়িত্ব কী, এজেন্সির দায়িত্ব কী—এসব সুস্পষ্টভাবে লিখিত থাকতে হবে।”
তিনি বলেন, “কেউ হারিয়ে গেলে, অসুস্থ হয়ে পড়লে, লাগেজ হারিয়ে গেলে বা অন্য কোনো ধরনের সমস্যায় করণীয় কী, কাকে জানাবে, এগুলোর স্পষ্ট গাইডলাইন থাকতে হবে। হজযাত্রীদের প্রত্যেকের কাছে এই বুকলেট দিতে হবে।
“নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সেটাও উল্লেখ থাকতে হবে।”
তিনি বলেন, “দেশেই একটি হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার স্থাপন করতে হবে, যেন দেশে বসেই সবসময় নজরদারির মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করা যায়।
“কল সেন্টারে যেসব অভিযোগ আসবে, সেগুলো এখান থেকে যেন সঙ্গে সঙ্গে মনিটরিং করা যায়। একটি ওয়েবসাইট করে দিতে হবে, যেখানে হজযাত্রীরা সবাই যুক্ত থাকবেন। তারা অভিযোগ জানাতে পারবেন; কেউ হারিয়ে গেলে সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অবস্থান খুঁজে পাওয়া যাবে।"
ভবিষ্যতে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করার জন্য কল সেন্টারে কী ধরনের অভিযোগ আসছে, সেগুলো মনিটরিং করারও নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
সেই সঙ্গে কোনো এজেন্সি দায়িত্ব পালন না করলে তার লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “এজেন্সির প্রশিক্ষণ আছে কিনা, দেখতে হবে। কর্মীদের প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে এজেন্সিগুলোকে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ও ‘ডি’ ক্যাটাগরি করে ফেলতে হবে। এসব ক্যাটাগরির মান পূরণে যেসব এজেন্সি ব্যর্থ হবে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেবেন।”
হজযাত্রীরা যেন যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের করণীয় সম্পর্কে অবগত থাকতে পারেন এবং কেউ যাতে বিভ্রান্ত না হন, সেজন্য বিষয়ভিত্তিক ভিডিও তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “প্রবলেম সলভিং ভিডিও হতে হবে। অসুস্থ হয়ে পড়লে, হারিয়ে গেলে, কোরবানি দিতে গিয়ে কোনো সমস্যা হলে করণীয় কী, এমন ভিডিও যাত্রীদের দেখিয়ে দিলে তারা মনোবল পাবেন। প্রস্তুত থাকতে পারবেন।"
পরের বছর থেকে হজ ক্রেডিট কার্ড চালু পরামর্শ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “চালু করে দিলে হজযাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। দেশে ফেরার পর যে কার্ডে যে অর্থ থেকে যাবে, সেটা নগদ ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।
“লাগেজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। সেজন্য চেক-ইনের পরে ট্যাগটা কপি করে রাখা যেতে পারে। ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে লাগেজ ট্যাগের তালিকা থাকবে।"
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন হজের নিবন্ধন করেছেন।
এ বছর সরকারি খরচে কাউকে হজে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।