একমি গ্রুপের পরিচালক ফাহিম সিনহার বাসায় বাবুর্চির কাজ ও বাজার করতেন আনোয়ার।
Published : 20 Feb 2023, 11:17 AM
ঢাকার গুলশানে আগুন লাগা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যাওয়া যুবকের পরিচয় জানা গেছে।
আনোয়ার হোসেন নামের ৩০ বছরের ওই যুবক ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার দিদারুল্লা গ্রামের কৃষক নুর ইসলামের ছেলে। রোববার গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার লাশ শনাক্ত করেন বড় বোন বিলকিস বেগম ও ছোট ভাই জুলহাস।
জুলহাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গুলশান-২–এর ওই ভবনে একমি গ্রুপের পরিচালক ফাহিম সিনহার বাসায় বাবুর্চির কাজ ও বাজার করতেন আনোয়ার।
পাঁচ ভাই এক বোনের মধ্যে আনোয়ার ছিলেন তৃতীয়। তার পরিবার গ্রামে থাকতেন। স্ত্রী আমেনা বেগম বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা বলে জানিয়েছেন জুলহাস ।
১৩ তলা ওই ভবনে রোববার সন্ধ্যা ৭টায় আগুন লাগার পর চার ঘণ্টার চেষ্টায় তা নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
আবাসিক ওই ভবনের নিচ তলা বাদে উপরের ১২ তলায় ছয়টি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে কয়েকটি পরিবারের বসবাস। আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভবনের বিভিন্ন তলায় অনেকে আটকা পড়েন। আগুন থেকে বাঁচতে ব্যালকনি থেকে পড়েন কয়েকজন।
গুলশান থানার এসআই বাবলুর রহমান বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, আনোয়ারও সেখান থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন। পরিবারের লিখিত আবেদনে বিনা ময়নাতদন্তে তার মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ফাহিম সিনহার বাসা ওই ভবনের উপরের দুটি ফ্লোরে। তার স্ত্রী সায়মা রহমানও আগুন থেকে বাঁচতে লাফ দিয়ে দোতলার সুইমিংপুলে পড়েন। আহত ও দগ্ধ অবস্থায় তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বার্ন ইনিস্টিউটের সহকারী রেজিস্ট্রার নুরে আলম বাবু জানান, গুলশানের ঘটনায় সায়মাসহ মোট তিনজন ভার্তি আছেন তাদের হাসপাতালে। তারা হলেন মোশা সিকদার ( ৩৩) এবং রওশন আলী (৩৫)।
তাদের মধ্যে রওশন আশুলিয়ার নিউ এইজ গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার কর্মী। আশুলিয়ায় থাকলেও রোববার সন্ধ্যায় তিনি ওই ভবনের দশম তলায় কোম্পানির এমডি আরিফ ইব্রাহীমের বাসায় গিয়েছিলেন অফিসের কাজে।
আর মোশা সিকদার কারখানার এমডি আরিফ ইব্রাহীমের গাড়ি চালক, ঢাকার কুড়িলে তার বাসা। আগুন লাগার সময় তিনিও ওই ভবনে আটকা পড়েছিলেন।
গুলশানের ওই বাড়ির কয়েকটি ভবন পর শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিকভাবে সেখানেই নেওয়া হয়।
হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সুব্রত কুমার সাহা বলেন, হাসপাতালে মোট ১৩ জন এসেছিলেন, তাদের মধ্যে আটজনকে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে রাজিব নামের একজন পেশায় বাবুর্চি, তাকে আই সি ইউ তে নেওয়া হয়। আর সায়মা রহমানকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
শিকদার মেডিকেলে ভর্তি অন্য ছয় জন হলো আব্দুল নূর, কহিনুর, হৃদি, রিয়া, রাহেলা হোসেন ও সেলিনা আক্তার। তাদের মধ্যে চার বছরের শিশু হৃদির পোড়া জখম রয়েছে।