“কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ নামে একজন বাংলাদেশ ব্যাংকের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেন”, বলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা।
Published : 09 Aug 2024, 01:35 AM
বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুমতি ছাড়া এক ব্যক্তি অস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়ার পরও পুলিশ না থাকার কারণে অস্ত্রটি জব্দ করে সেই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সেই ব্যক্তি কী উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছেন, সেই বিষয়টি প্রকাশ করা হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশহীন অবস্থায় সারা দেশে নৈরাজ্য ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটল।
বাংলাদেশ ব্যাংক একটি কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করার নিষেধ রয়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতির বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ নামে একজন বাংলাদেশ ব্যাংকের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেন। অস্ত্র নিয়ে তিনি গভর্নর বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করতে চাইলে সেখানকার সিকিউরিটি তাকে বাধা দেয়।”
সাঈদী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক খাতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের ব্যক্তিগত সহকারীর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশের পাস নিয়েছিলেন। তবে সে সময় মাসুদ বিশ্বাস কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ছিলেন না। তারপর কামরুজ্জামান সাঈদী সেই ব্যক্তিগত সহকারীকে নিচে ডেকে আনান এবং তার কাছে অস্ত্র দিয়ে তিনি নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে যান।
এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক লে কর্নেল (অব) মো. শামিমুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে অস্ত্র জব্দ করেন।
সাঈদীর সঙ্গে কথা বলে শামিমুর তাকে ছেড়ে দেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি পুলিশ না থাকার কথা জানান।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খোঁজ নিয়ে জানাতে হবে।”
শামিমুর বলেন, “এখানে আমাদের ভল্ট আছে। অস্ত্রের মুখে সে আমাদের ভল্ট খুলতে বাধ্য করতে পারে। তাই বৈধ অস্ত্র নিয়েও বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার সুযোগ নেই।
“এখন থানা পুলিশ থাকলে তাকে পুলিশের কাছে হ্যান্ডওভার করতাম। যেহেতু থানা সচল নেই, তাই তার অস্ত্র জব্দ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
অস্ত্রটি লাইসেন্স করা জানিয়ে তিনি বলেন, “সে কীভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেল তা আমরা যাচাই করে দেখব।”
কার কাছ থেকে পাস নিয়ে সোহাগ বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকেছিলেন- এই প্রশ্নে নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, “সে বিএফআইইউর প্রধানের পিএর কাছ থেকে পাস নিয়ে ব্যাংকে প্রবেশ করেছে। এখানেও আইনের ব্যত্যয় হয়েছে। এই সময় মাসুদ বিশ্বাস অফিসে ছিলেন না। তিনি (সোহাগ) আরেকজন কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে জেনেছি। আমরা জানতে পেরেছি, সোহাগ প্রায়ই মাসুদ বিশ্বাসের কাছে আসেন।”