গভীর রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়।
Published : 26 Dec 2024, 05:24 PM
প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় কয়েক ঘণ্টা ধরে জ্বললেও তা টের পাননি অদূরে থাকা অনেকেই।
কেউ কেউ ঘটনা জেনেছেন অনেক পড়ে, কেউবা সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনেছেন আগুনের কথা।
সচিবালয়ের ৫ নম্বর গেইটের ঠিক বিপরীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভেতরে অগ্রণী ব্যাংকের একটি এটিএম বুথ রয়েছে।
সেই বুথের নিরাপত্তাকর্মী আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, “আমি প্রায় ৯ বছর ধরে এই বুথের দায়িত্বে আছি। রাতে আমি বুথের মধ্যেই যথারীতি ঘুমিয়ে ছিলাম। পরে সকাল ৮টার দিকে খবর পাই।
“বুথের নিরাপত্তার জন্য আমরা রাত ১০টার পর সাধারণত পরিচিত না হলে আর খুলি না। পরে গিয়ে দেখি, সেখানে ফায়ার সার্ভিস আর সাধারণ মানুষের ভিড়।”
বুধবার গভীর রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ৬, ৭, ৮, ৯ এই চারটি তলা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে অষ্টম ও নবম তলায় ক্ষতি হয়েছে বেশি, সেখানকার অধিকাংশ নথি পুড়ে গেছে।
রাতে প্রেস ক্লাবে কর্মরত ছিলেন সেখানকার জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তাকর্মী রমেশ চন্দ্র শীল।
আগুনের খবর কীভাবে জেনেছেন, এ প্রশ্ন শুনে বললেন, “আমরা প্রেস ক্লাবের ভেতরেই ছিলাম। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুন লাগার খবর পাই। সে সময় আমাদের নাইটচেকার একজন আছেন, সুজন নামে; তিনি এসে আমাকে প্রথম জানালেন।
“পরে আমি সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গেলাম। গিয়ে দেখলাম একটা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। পাঁচ নম্বর গেটে গার্ডের দায়িত্বে থাকা পুলিশেরা ঘুমাচ্ছেন। তো আমরা তো বাইরে থেকে দেখলাম আগুন জ্বলতেছে।”
আরেক নিরাপত্তাকর্মী পান্নাও একই ধরনের তথ্য দিলেন। তার ভাষ্য, অগ্নিকাণ্ডের সাথে সাথে তারা কেউই জানতে পারেনি। নাইটচেকার ডাকার পর রাত ৩টার দিকে রমেশ চন্দ্রের সঙ্গে গিয়ে তিনি আগুন দেখতে পান।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কর্মচারী এবং গেইটের সামনের চা বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাতে তো আমরাও সাধারণত থাকি না দোকানে। পরে সকালে এসে শুনি সচিবালয়ে আগুন লেগেছে।”
বুধবার রাতের আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় পিষ্ট হয়ে নিহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সোয়ানুর জামান নয়ন।
আগুনের ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন) মোহাম্মদ খালেদ রহীমকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।