গ্রাফিতি ও প্রামাণ্য চিত্রের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের চিত্র তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে।
Published : 09 Nov 2024, 10:27 PM
নাচ-গান-কবিতা, গ্রাফিতি ও প্রামাণ্য চিত্রের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনকে স্মরণ করেছে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গঠিত সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটি।
ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শনিবার সন্ধ্যায় ‘জুলাই জাগরণী’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিগত সরকারের সময়ের ‘গুম-খুনের’ চিত্রও তুলে ধরেন তারা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গণআন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর গত ৫ অগাস্ট গুলিতে প্রাণ হারানো শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠি পাঠ করা হয়।
অনুষ্ঠানে কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, “দেশের সর্বস্তরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বকে সংহত করে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী কাঠামো ও শক্তির বিরুদ্ধে আমরা প্রতিরোধ অব্যাহত রাখতে চাই। এ লড়াই একদিকে সাংস্কৃতিক, অন্যদিকে রাজনৈতিক। সংকীর্ণ দলীয় কিংবা গোষ্ঠী স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় স্বার্থ চিহ্নিত করে ছাত্র-জনতার সংহতি নিশ্চিত করা আমাদের অগ্রাধিকার।”
তিনি বলেন, “বিগত পাঁচ দশকের রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য, পরিবারতন্ত্র ও গোষ্ঠীতন্ত্রের রাজনীতি গত পনের বছরে ফ্যাসিবাদে রূপ নেয়। গুম, খুন, আতঙ্ক, ভোট ডাকাতি, লুটপাট ও গণতন্ত্রহীনতা ছিল আওয়ামী মাফিয়াদের রাজনৈতিক হাতিয়ার। দেশের মানুষ এই পুরনো, ব্যর্থ ও জালেম ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করে নতুন করে রাষ্ট্রব্যবস্থা পুনর্গঠনের ডাক দিয়েছে।”
নিজের কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে নাসীরুদ্দিন বলেন, “রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনে প্রয়োজনীয় নীতিনির্ধারণী প্রস্তাবনা তৈরি ও সেটা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সেইসঙ্গে গণপরিষদ গঠন করে গণভোটের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরির জন্য গণআলোচনার আয়োজন করা আমাদের অন্যতম কাজ হবে। ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার ও স্মৃতি ধরে রাখার প্রয়াসের অংশ হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটির আজকের এই সাংস্কৃতিক আয়োজন।”
নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিন বলেন, “আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে সাংস্কৃতিক ফ্যাসিজম কায়েম করেছিল, এই সাংস্কৃতিক ফ্যাসিজমকে জুলাই অভ্যুত্থানে র্যাপার ও গ্রাফিতি শিল্পীরা ভেঙ্গে দিয়েছে। আমরা সামনের দিনে সকল শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে লড়াইয়ে নামতে চাই, নতুন সাংস্কৃতিক বন্দোবস্তের জন্য।
“আমরা সবাইকে নিয়ে নতুন সাংস্কৃতিক বিপ্লব সংঘটিত করব এবং সামনের দিনে আমরা নতুন ম্যানিফেস্টো সবার সামনে তুলে ধরব।”
অনুষ্ঠানে নাচ-গানের পাশাপাশি ‘আয়নাঘর’ শীর্ষক মূকাভিনয় উপস্থাপন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশন।