“সংস্কারের প্রকৃতি ও পরিধির বিষয়ে এখনো সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ,” বলেন তিনি।
Published : 23 Jan 2024, 04:08 PM
চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে স্পেন এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল আয়োজিত ‘টুওয়ার্ডস আ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম পর্যালোচনা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এই রেটিং ব্যবস্থা বর্তমানে অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তহবিল পাওয়ার সুযোগ সীমিত করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন ফোরামে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের ভোটাধিকার, কোটা এবং বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবিএস) এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (আইএফআইএস) প্রতিনিধিত্বের যে সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা তাদের দর কষাকষির ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করছে।
“ঋণের ঝামেলা এড়াতে আমরা উচ্চ-সুদের ঋণ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ কখনোই ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি এবং আমরা সেই রেকর্ড বজায় রাখতে পারব আশা করি।”
আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোকে অন্তর্ভূক্তিমূলক করার জন্য গ্লোবাল সাউথের প্রতিনিধিত্ব করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মত দেশের উন্নয়ন এটাই দেখায় যে, আমাদের অংশ আমরা ঠিকই করতে পারি।”
তিনি বলেন, “আমরাও মনে করি, আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু সংস্কারের প্রকৃতি ও পরিধির বিষয়ে এখনো সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ।”
এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেন। প্রথম প্রস্তাবে তিনি বলেন, এমডিবি, আইএফআই এবং বেসরকারি ঋণদাতা সংস্থাগুলোকে তাদের অগ্রাধিকারগুলো পুনরায় সাজাতে হবে এবং এসডিজি বাস্তবায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবেলার জন্য অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য স্বল্প ব্যয়ে, রেয়াতি হারে তহবিলের পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করা দরকার। সেই সঙ্গে বিপুল পরিমাণে অনুদান দরকার, যাতে দুর্বল দেশগুলো সংকটকালের ধাক্কা সামলাতে পারে।
চতুর্থ দফায় তিনি বলেন, ঋণদাতাদের মধ্যে স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের ভিত্তিতে ন্যায্য ও কার্যকর সহায়তা হিসেবে ত্রাণ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
পঞ্চম এবং শেষ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটার পরিবর্তে এসডিআর ঋণের সীমা ঠিক করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারীর ঠিক আগে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৮.১৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি পেয়েছিল। স্বাস্থ্য, জীবনযাত্রার ব্যয় এবং জলবায়ু সংকট দেশের অর্থনীতিকে চাপের মধ্যে ফেলেছে।
সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, লেনদেন ভারসাম্য বজায় রেখে উন্নয়ন ব্যয় অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে।
এই সভা আহ্বান করায় স্পেনের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) থিমেটিক অ্যামবেসেডর সায়মা ওয়াজেদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। সংবাদসূত্র: বাসস
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)