অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষাউপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ইতোমধ্যে চলমান শিক্ষাক্রম গুটিয়ে নিয়ে পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার আভাস দিয়েছেন।
Published : 27 Aug 2024, 03:49 PM
মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার এবং চলমান পাঠ্যক্রম ২০২৫ সাল থেকে স্থগিত চেয়ে রিট আবেদন করেছেন একজন আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামরুল হাসান মঙ্গলবার জনস্বার্থে এ রিট আবেদন করেন।
শিক্ষা সচিব, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে বলে রিটকারী আইনজীবী জানিয়েছেন।
২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতি সামনে রেখে তথ্য-প্রযুক্তিতে গুরুত্ব দিয়ে সৃজনশীল শিক্ষার প্রসারে ২০১২ সালে শিক্ষাক্রম তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। সেসময় সৃজনশীল পদ্ধতি, পিএসসি ও জেডিসি পরীক্ষাসহ নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
এরপর পরীক্ষা ও মুখস্ত নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন শুরু হয়।
ওই বছর দেশের সব প্রাথমিক স্কুলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে চালু হয় নতুন শিক্ষাক্রম। এরপর চলতি বছর তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম এবং নবম শ্রেণি যুক্ত হয় নতুন শিক্ষাক্রমের তালিকায়।
নতুন শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা না রাখা, এসএসসির আগে পাবলিক পরীক্ষা না নেওয়া, নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগভিত্তিক বিভাজন তুলে দেওয়াসহ একগুচ্ছ পরিবর্তন আনা হয়।
চাপ কমাতে বছর শেষে সামষ্টিক মূল্যায়নের আগে শিক্ষাবর্ষ জুড়ে চলে শিখনকালীন মূল্যায়ন। বেশ কিছু বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হয় শতভাগ।
আওয়ামী লীগ সরকারের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছিল, পরীক্ষা ও মুখস্ত নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শেখার মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ প্রক্রিয়াকে আনন্দময় করেছে।
তবে পরীক্ষা কমানো, বিভাগ বিভাজন তুলে দেওয়া, মূল্যায়ন পদ্ধতিসহ শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন দিক নিয়ে অনেকে সমালোচনাও করেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসন অবসানের পর নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী রাষ্ট্র ব্যবস্থার সকল পর্যায়ে সংস্কারের ওপর জোর দিচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষাউপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ইতোমধ্যে চলমান শিক্ষাক্রম গুটিয়ে নিয়ে পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার আভাস দিয়েছেন।
গত ১৮ অগাস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমরা আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যাব। কিন্তু এমনভাবে যাব যেন কোনো শিক্ষার্থীর পড়ালেখায় কোনো অস্বস্তি না হয়। এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। কীভাবে আমরা আগে শিক্ষাক্রমে ফিরে যাব সেটা পর্যালোচনা হচ্ছে।"
পুরনো খবর
আমরা আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যাব: শিক্ষা উপদেষ্টা
খরচ 'বাড়িয়েছে' নতুন শিক্ষাক্রম: গবেষণা
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক কেন?
নতুন শিক্ষাক্রম: আনন্দের মাঝে অভাবও 'অনেক'