তিন বছর আগে অভিযোগপত্র দিলেও আসামিপক্ষের সময় আবেদনে বারবার শুনানি পিছিয়েছে।
Published : 05 May 2024, 03:49 PM
অর্থ পাচারের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) মিয়া নূরুদ্দীন আহম্মেদ অপুসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আবারো পিছিয়ে গেছে।
আসামিপক্ষের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে রোববার ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ৩০ মে নতুন তারিখ রেখেছেন।
শুনানির জন্য এদিন অপুকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে আসামিদের প্রধান আইনজীবী অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছেন জানিয়ে সময়ের আবেদন করেন কনিষ্ঠ আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এর আগে কারাগারে আসামি নূরুদ্দীন অপু অসুস্থ, এজলাসে না আনা, আইনজীবীর শুনানির প্রস্তুতি নেই জানিয়ে বারবার শুনানি পেছানোর আবেদন করা হয়। এসব অজুহাতে মামলাটির বিচারে বিঘ্নিত হচ্ছে।”
রোববারও শুনানি পেছানোর পর এ আইনজীবী বলেন, “আমি রাষ্ট্রপক্ষে কী কী কারণে কোন পয়েন্টে অভিযোগ গঠন করা হবে তা উল্লেখ করে অভিযোগ গঠনের প্রস্তাব রেখেছি। বলেছি, অব্যাহতির আবেদনের কোনো সুযোগ না দিয়ে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেওয়া হোক।
“তবে আসামিপক্ষের সময় আবেদনে আজ বিচারক বলেছেন, এটাই শেষ বার। আর সময় আবেদন গ্রাহ্য করা হবে না।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি অপু এক সময় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- হুন্ডি ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান আতিক, নাফিজ ইউনাইটেড করপোরেশনের ম্যানেজার ও স্বত্বাধিকারী মাহমুদুল হাসান ওরফে ফেরদৌস, তার ভাগ্নে এ এম হায়দার আলী ওরফে নাফিজ, আমেনা এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড সার্ভিসের ম্যানেজার জয়নাল আবেদীন ও কর্মচারী আলমগীর হোসেন এবং ফায়েজুর রহমান।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। তার চার দিন আগে মতিঝিলে নাফিজ ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ ও ইউনাইটেড করপোরেশনে অভিযান চালিয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম আলী হায়দারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
পরে হায়দারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পল্টনের হাউজ বিল্ডিং রোডের বায়তুল খায়ের টাওয়ারের সিটি মানি এক্সচেঞ্জ থেকে আরও ৫ কোটি টাকা জব্দ করা হয়।
এছাড়া গুলশানে অপুর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আমেনা এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৫০ টাকাসহ জয়নাল আবেদীন এবং আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সে সময় র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, হায়দারের মামা মাহমুদুল হাসান আসামি অপুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর জন্য বিদেশ থেকে দেড়শ কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে আনা হয়, তার মধ্যে সাড়ে ৩ কোটি টাকা অপুর কাছে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় র্যাব-৩ এর নায়েব সুবেদার ইব্রাহিম হোসেন মতিঝিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। তদন্ত করে সাতজনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৩ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দেন সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমের পরিদর্শক ইব্রাহিম হোসেন। তারপর থেকেই বিভ্নি কারণে অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়েছে।