ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলার পর ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
Published : 04 Apr 2024, 03:19 PM
ফিলিস্তিনের বেসামরিক মানুষদের হত্যার ধারাবাহিকতায় ত্রাণকর্মীদের হামলার ঘটনায় পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি আশা করব, গতকালের ঘটনার পর, যেখানে তিনজন ব্রিটিশ নাগরিকও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, গতকালকের ঘটনার পর পশ্চিমা বিশ্বের বোধোদয় হবে, পশ্চিমা বিশ্ব ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
সোমবার গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দাইর আল বালাহ এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ডসেন্ট্রাল কিচেন (ডব্লিউসিকে) এর সাত কর্মী নিহত হন।
তাদের মধ্যে পোল্যান্ডের একজন, যুক্তরাজ্যর তিনজনসহ অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার এক দ্বৈতনাগরিক ছিলেন। বাকি একজন ফিলিস্তিনি।
ডব্লিউসিকে বলছে, দাইর আল বালার একটি গুদাম থেকে চলে যাওয়ার সময় ত্রাণবাহী গাড়িবহরে হামলায় ওই কর্মীরা নিহত হন। তারা সমুদ্রপথে গাজায় নেওয়া ১০০ টনের বেশি খাবার ওই গুদামে রেখে আসতে গিয়েছিল।
ইসরায়েলি বাহিনীর ওই হামলার কথা স্বীকার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে’ এমন ঘটনা ঘটে গেছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ইসাক হারজোগ ত্রাণকর্মীদের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় হাছান মাহমুদ বলেন, “যে ঘটনাটি গাজায় ঘটেছে, সেটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। ইসরায়েলের এই বর্বরতা, নৃশংসতা, মানুষ হত্যার মহোৎসব, সেটি থামছেই না। এবং গতকাল সেখানে ত্রাণকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে, এটি কল্পনারও বাইরে।
“আপনারা জানেন যে, কয়দিন আগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে যুদ্ধবিরতির; সেই প্রস্তাবকেও তারা তোয়াক্কা করছে না।”
হাছান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকার যে কোনো যুদ্ধের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনি ভাইদের পাশে ছিল, আছে এবং থাকব।”
ফিলিস্তিন সংকটের দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান আবারও তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা মনে করি, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে– ৬৭ সালের সীমানার ভিত্তিতে, পূর্ব জেরুজালেমকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসাবে প্রতিষ্ঠার মধ্যেই সেখানে শান্তি নিহিত। অন্যথায় সে অঞ্চলে কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না।
“অবশ্যই আমরা দুই রাষ্ট্র সমাধানে বিশ্বাস করি, তবে সেটি ১৯৬৭ সালের সীমানার ভিত্তিতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তৈরি করা সম্ভব, অন্যথায় নয়।”
ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলার পর ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা আশা করব, যারা ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করে, সেই অস্ত্র যে নিরপরাধ নারী-শিশুদেরকে হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, সাধারণ মানুষকে হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, এমনকি পশ্চিমা বিশ্বের এইড ওয়ার্কারদের হত্যা করা হচ্ছে; এর পরে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হবে।”
পুরনো খবর
গাজায় ত্রাণকর্মীদের উপর ইসরায়েলের হামলায় ‘ক্ষুব্ধ’ বাইডেন
বিশ্বে ত্রাণকর্মীদের জন্য এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান গাজা
গাজায় ত্রাণকর্মী নিহত: ইসরায়েলের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে পোল্যান্ড-যুক্তরাজ্য