এজন্য নথিপত্র চেয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) চিঠিও দিয়েছে কমিশন।
Published : 22 Aug 2024, 12:45 AM
সিঙ্গাপুরে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে বন্ধ থাকা অনুসন্ধান আবারও শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এরই মধ্যে অভিযোগ অনুসন্ধানে নথিপত্র চেয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) চিঠিও দিয়েছে কমিশন।
এ অভিযোগ অনুসন্ধানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুদকের উপপরিচালক নূর-ই-আলমকে। তিনি এরকম একটি অনুসন্ধান শুরুর তথ্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেও বিস্তারিত বলতে চাননি।
এক বছর আগে এমন অভিযোগ নিয়ে দুদক অনুসন্ধানে নামলেও বিষয়টি আইন-আদালতের পর তা বন্ধ থাকে। কর্মকর্তারা বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর গত রোববার আপিল বিভাগের একটি আদেশের কপি পায় দুদক, সেখানে অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। আপিল বিভাগের ওই আদেশে বলা ছিল, 'অভিযোগটি যথার্থ নয়। তবে দুদক বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ চাইলে অভিযোগটি অনুসন্ধান করতে পারে।'
ওই কর্মকর্তা বলেন, সেই অনুযায়ী গত মঙ্গলবার অনুসন্ধানটি পুনরায় শুরু করা হয়। সেদিনই নথিপত্র চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয়।
সরকার পতনের আগে ও পরে নানা কারণে আলোচিত ব্যবসায়িক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান এস আলমের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের বিষয়টি সামনে আসে ২০২৩ সালের অগাস্টে। তখন এ বিষয়ে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হলেও তা আর এগোয়নি।
দুদক ২০২৩ সালের ১৩ অগাস্ট এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুর উদ্যোগ নেয় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে ৪ অগাস্ট প্রকাশিত ‘এস আলম’স আলাদিন‘স ল্যাম্প’ শিরোনামে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে ‘কমপক্ষে এক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য’ গড়ে তুলেছেন। যদিও বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো অনুমতি তিনি নেননি।
ডেইলি স্টার লিখেছে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাইরে বিনিয়োগের জন্য এ পর্যন্ত ১৭টি কোম্পানিকে অনুমতি দিলেও চট্টগ্রামভিত্তিক বৃহৎ এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম সেই তালিকায় নেই। এরপরও, গত এক দশকে সিঙ্গাপুরে এস আলম অন্তত দুটি হোটেল, দুটি বাড়ি, একটি বাণিজ্যিক স্পেস এবং অন্যান্য সম্পদ কিনেছেন। এসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপায়ে কাগজপত্র থেকে তার নাম বাদ রাখা হয়।
দুদকের কর্মকর্তারা বলেন, অনুসন্ধান শুরুর পর সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশে তা থেকে সরে আসে দুদক। ওই বছরের ২৪ আগস্ট এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও দুদকের অনুসন্ধান সম্পর্কিত বিষয়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে হাই কোর্ট।
এরপর চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান নিয়ে পাঁচ মাস আগে হাই কোর্টের দেওয়া স্বতঃপ্রণোদিত রুল খারিজ করে আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের ওই আদেশের কপি গত রোববার হাতে পায় দুদক। কর্মকর্তারা বলেন, এতে অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়।
অর্থপাচারের এ অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলমকে ফোনে পাওয়া যায়নি। ফোন ধরেননি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ফিন্যান্স) সুব্রত কুমার ভৌমিকও।