“ফিলিস্তিনিরা কোনোভাবে মূল্যহীন নয়। প্রতিটি ফিলিস্তিনি জীবনের মূল্য আছে,” বলেছেন তিনি
Published : 19 Dec 2024, 10:26 PM
ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় ইসরায়েলের নির্মম গণহত্যা অব্যাহত থাকার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি হতাশা ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ ও আঞ্চলিক সীমানার বাইরের সবার প্রতি ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো নির্মমতা বন্ধে দৃঢ় পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার মিশরের কায়রোতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সংগঠন ‘ডেভেলপিং-৮’ বা ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে মুহাম্মদ ইউনূস এই আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলাহয়, সম্মেলনে ‘গাজা ও লেবাননের মানবিক সংকট এবং পুনর্গঠন চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক একটি বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এমন একটি সময়ে একত্রিত হয়েছি, যখন দখলকৃত গাজা এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের আগ্রাসন ও ১৪ মাসব্যাপী নির্মম গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে।”
ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের আন্তর্জাতিক নীতি, আইন ও কনভেনশন লঙ্ঘনের উদাসীনতায় হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৬০ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মী ও পেশাজীবীর নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ এবং আঞ্চলিক সীমানার বাইরেও সকলকে আহ্বান জানাই যে, তারা যেন ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো নির্মমতা বন্ধে যৌথ ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়।
“লেবাননের সহিংসতা যেভাবে বিস্তৃত হচ্ছে, তাতে আরও উত্তেজনার শঙ্কা বাড়ছে। এটি অঞ্চলজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য দীর্ঘমেয়াদী এবং মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে, যা শুধুমাত্র অর্থনীতির ওপর নয় বরং বৈশ্বিক সমাজ ও রাজনীতির ওপরও প্রভাব ফেলবে।”
কায়রো থেকে ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে, এই ঐতিহাসিক সংকটময় মুহূর্তে ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের প্রতি নিরঙ্কুশ সংহতি ও অঙ্গীকার জানানোর আহবান জানান ইউনূস।
বাংলাদেশের জনগণ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ফিলিস্তিনিরা কোনোভাবে মূল্যহীন নয়। প্রতিটি ফিলিস্তিনি জীবনের মূল্য আছে।”
তিনি বলেন, “এটি শুধুমাত্র মুসলমানদের বিষয় নয়, বরং এটি একটি সর্বজনীন মানবিক বিষয়। এটি দুর্বলদের রক্ষা করার জন্য আমাদের সর্বজনীন অঙ্গীকারের বিষয়। তাদের পাশে দৃঢ়ভাবে থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
বাংলাদেশ তার ইতিহাসজুড়ে ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে থাকার কথা তুলে ধরে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা সর্বদা ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্ব ও সহিংস দমন নীতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। আমরা ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী সমাধানের জন্য, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মাধ্যমে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে অটল রয়েছি।
“ফিলিস্তিনকে অবশ্যই ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও কার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
ডি-৮ সম্মেলন থেকে এমনি একটি প্রক্রিয়া শুরুর আহবান জানান প্রধান উপদেষ্টা যেখানে ফিলিস্তিন ও লেবাননের পুনর্গঠনের আনুমানিক ব্যয় নিরূপণ, আন্তর্জাতিক কৌশল প্রণয়ন ও প্রয়োজনীয় সম্পদ সংগ্রহ সম্ভব হবে।