হেরে গেলে এমনই বলে: হিরো আলমকে নিয়ে ইসি

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলছেন, উপ-নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তি নেই।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2023, 12:07 PM
Updated : 2 Feb 2023, 12:07 PM

ভোটের ফল পাল্টানোর যে অভিযোগ হিরো আলম করেছেন, সেটাকে পরাজিত প্রার্থীর সাধারণ প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন। ইসি বলছে, ভোটের অনিয়মের অভিযোগের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি।

সংসদ থেকে বিএনপির পদত্যাগের ফলে শূন্য ছয়টি আসনে বুধবার উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। এতে বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনে প্রার্থী হন সোশাল মিডিয়ায় আলোচিত মুখ হিরো আলম, যার প্রকৃত নাম আশরাফুল আলম।

ভোটের ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, বগুড়া-৪ আসনে ৮৩৪ ভোটে সরকার সমর্থক প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে হেরেছেন হিরো আলম।

তিনি এই ফল প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ভোটে তিনি জয়ী হলেও ফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে।

Also Read: ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম

Also Read: প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে হিরো আলম বললেন, তার চাই সিংহ মার্কা

বৃহস্পতিবার ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, “ওনার (হিরো আলম) অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।

“তার অভিযোগ আমলে নিয়ে সকাল থেকে আমরা ডিসি সাহেবের সাথে, জেলা নির্বাচন অফিসার এদের সবার সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে, এধরনের কোনো বিষয় তাদের কাছে নেই। তদের রেজাল্ট শতভাগ ঠিক।”

হিরো আলম অভিযোগ তোলার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল তা খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেন।

তার চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়া-৪ উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে সকালে ইভিএমের ফলাফলের প্রিন্ট, পিডিএফ কপি ঢাকায় পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে বগুড়ায় হিরো আলমের কাছেও বৃস্পতিবার বিকালে তা হস্তান্তর করা হয়।

বগুড়া জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্যারেরা (ইসি) স্বপ্রণোদিত হয়ে জানতে চেয়েছে বিষয়টা কী? টকশোতে সম্ভবত হিরো আলম কথা বলেছে, এরপরে আমাদের সকালে ফোন করেছে।

“আমাদের মতে সব ঠিক আছে। আমাদের এখানে কেউ একটা কোনো অভিযোগ করেনি। ফলাফল শিট নিয়ে গেল এখন (৪টার পরে)। সব দিয়ে দিয়েছি। অভিযোগ নেই তার (হিরো আলম)। ফলাফল সবই স্পষ্ট।”

Also Read: সরকার আমাকেও ভয় পায়, আশ্চর্য: হিরো আলম

রাশেদা সুলতানা বলেন, “কোনো প্রার্থী কোনো লিখিত অভিযোগ করে নাই। নির্বাচনের পূর্বের প্রস্তুতি সন্তোষজনক ছিল। ভোটের দিন ভোটের ভেতরে কোনো অনিয়ম হয় নাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া দু-একটা দেখতে পেরেছি। তবে ভিতরে ভোট ডাকাতি, ইভিএম নিয়ে কোনো সমস্যা হয় নাই। পুরোপুরি ভোটটা সন্তোষজনক হয়েছে।”

কাহালু-নন্দীগ্রাম উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনে তানসেন মশাল প্রতীকে পান ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম একতারা প্রতীকে পান ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট।

ইসির কাছে বাতিল হওয়া প্রার্থিতা আদালতে গিয়ে ফিরিয়ে আনা হিরো আলম ভোটের ফল নিয়েও আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন

তবে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা মনে করছেন, দেশে ভোটে হেরে যাওয়ার পর পরাজিত প্রার্থী যেমন প্রতিক্রিয়া দেখায়, হিরো আলমেরটাও তাই।

“একজন প্রার্থী যখন হেরে যায় আমাদের দেশের সংস্কৃতিটা কিন্তু এরকমই। হেরে গেলে প্রশ্নবিদ্ধ করার নানান ধরনের প্রবণতা কিন্তু আছে, আমাদের দেশে। এটা শুধু হিরো আলম সাহেব নয়, আমরা যতগুলো ইলেকশন করলাম, সব জায়গায় এধরনের প্রবণতা আমার লক্ষ্য করেছি।”