“ছাত্রদের যারা চিহ্নিত দোষী- তারা থাকবে, বাকিরা যাতে মুক্তি পায়- সে ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছি," বলেন তিনি।
Published : 03 Aug 2024, 01:17 PM
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “কোটা আন্দোলনকারীরা যদি চায়, আমি তাদের সাথে বসব, তাদের কথা শুনব। তাদের দাবি-দাওয়া এ পর্যন্ত মেনে নিয়েছি। আরও কিছু আছে কি না- সেটা আমার শুনতে হবে। আমি সংঘাত চাই না।”
শনিবার গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে সরকারপ্রধান এ আগ্রহের কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের সামনে আমি বলছি, দেশবাসীর সামনে বলছি, কখনোই আমি দরজা বন্ধ করিনি। গণভবনের দরজা খোলা, যখনই আন্দোলনকারীরা বসতে চায়- আমি আবারও বলছি, আন্দোলনকারীরা যদি আসতে চায়, যেকোনো সময় আসতে চায়- আমি রাজি আছি, আলোচনা করতে পারে। দরকার হলে অভিবাবকদেরও নিয়ে আসতে পারে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “সর্বজনীন পেনশন স্কিম- এটা কিন্তু ২০০৮ সালে আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে ছিল, এটা আমরা করব। বহু সময় নিয়ে চিন্তাভাবনা করে পেনশন স্কিমটা চালু করেছি। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য আমরা বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছি।
“বিশ্ববিদ্যালয়, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং প্রজাতন্ত্রের সকল বেতনভুক্ত কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল করে দিয়েছি। একেবারে বাতিল করে দিয়েছি।"
আন্দোলনের মধ্যে ঘটা সহিংসতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিচার বিভাগীয় যে তদন্ত কমিটি আমি করেছিলাম, আমি কিন্তু কারও দাবির অপেক্ষা করিনি। আমি চাই, যারাই এর সঙ্গে জড়িত- সে যেই হোক, সে পুলিশই হোক বা অন্য যে কেউই হোক, অস্ত্রধারী হোক বা যে কেউই হোক; আমি চাই সকলেরই তদন্ত হোক বিচার হোক।
“এই যে জ্বালাও-পোড়াও, শুধু ঢাকা না- যে সমস্ত জায়গায় এই ধংসাত্মক কর্মকাণ্ড হয়েছে- এর তদন্ত করে যথাযথ বিচার হবে। তার জন্য যে দুজন জুডিশিয়াল নিয়োগ দিয়েছিলাম, তার সাথে আরও একজন- তিনজন সদস্য করে তাদের কর্ম পরিধিটাও বাড়ালাম, সময়টাও বৃদ্ধি করে দিলাম; যাতে যথাযথভাবে এর তদন্ত হয়।”
সরকারপ্রধান বলেন, “আমি চাই, এ ধরনের অন্যায়, হত্যাকাণ্ড যারা ঘটায় তারা তো আমার দেশের নাগরিক; সে পুলিশ হোক- শিশু হোক, ডাকাত হোক, ছাত্র হোক- এর তদন্ত হয়ে যথাযথ বিচার হবে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার হবে।"
শেখ হাসিনা বলেন, “হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সে যেই হোক, তার বিচার করা হবে; যারা জড়িত- তদন্ত করেই বের করা হবে।
“যারা অস্ত্রধারী, যেমন রংপুরে একটা ঘটনা ঘটেছে, যে পুলিশ দায়ী- সেই পুলিশকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে এবং তার বিচার হবে। ইতোমধ্যে রংপুরের পুলিশকে সাসপেন্ড করে দিয়েছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “অ্যারেস্ট যাদের করা হয়েছে, তাদের মধ্যে পরীক্ষার্থী যারা ছিল- তাদের সবাইকে জামিন দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
“আমি এটাও নির্দেশ দিয়েছি- এদের মধ্যে নিরীহ ছাত্র- যারা যারা একেবারে খুনের সাথে জড়িত না, বা ধ্বংসাত্মক কাজের সাথে জড়িত না; তাদেরকে মুক্তি দেওয়া শুরু হবে, ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। যারা যারা চিহ্নিত দোষী তারা থাকবে, বাকিরা যাতে মুক্তি পায়, সে ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছি।"