পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানি বাসায় ওষুধ দিয়ে দুই-তিন ঘণ্টা পরে ঘরে ঢুকতে বলেছিল। পরিবারটি নয় ঘণ্টা পরে বাসায় ঢুকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়।
Published : 06 Jun 2023, 12:16 AM
ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এক বাসায় এক ব্যবসায়ীর দুই সন্তানের মৃত্যুর পর বালাইনাশক কোম্পানির দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পোকামাকড় মারতে নিজের বাসায় ওষুধ প্রয়োগে ‘ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেড’ নামে ওই কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষার।
তাতে নিজের দুই শিশু সন্তানের মৃত্যুর পর তিনি ভাটারা থানায় মামলা করেন।
সেই মামলায় ওই কোম্পানির দুই কর্মকর্তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে সোমবার রাতে জানান ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহীদ উল্লাহ।
ওই দুই কর্মকর্তার নাম কিংবা মামলায় কারা কারা আসামি, সে বিষয়ে কিছু তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
পোকা মারতে বাসায় ‘গ্যাস ট্যাবলেট’, দুই সন্তানের মৃত্যু
ব্যবসায়ী মোবারক ঢাকা উত্তরা রয়েল ক্লাবের সাবেক সভাপতি। তার দুই ছেলের একজন রোববার সকালে, অন্যজন গভীর রাতে মারা যায় বলে ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শরীফুল ইসলাম জানিয়েছিলেন। তার মেয়ে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
পরিদর্শক শরীফুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাসার পোকামাকড় তাড়ানোর জন্য বারিধারার ‘ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেড’ নামের একটি পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন মোবারক। ওই কোম্পানির কর্মীরা শনিবার বাসায় ওষুধ দিয়ে দুই-তিন ঘণ্টা পরে ঘরে ঢুকতে বলেছিল।
“পরিবারটি নয় ঘণ্টা পরে বাসায় ঢুকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। তাদের সকলেরই পেট খারাপ, বমির মত উপসর্গ দেখা দেয়। রোববার ভোরে নয় বছরের ছোট ছেলেটি মারা যায়। ছোট ছেলেকে দাফন করে আসতে না আসতেই গভীর রাতে ১৫ বছর বয়সী বড় ছেলের মৃত্যু হয়।”
সোমবার সকালে পুলিশ এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যাওয়া ১৫ বছরের ছেলেটির লাশ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ওই পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সেই পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানি পোকামাকড় নিধনের জন্য এলুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট (গ্যাস ট্যাবলেট) ব্যবহার করেছিল, যেটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। সেই গ্যাসের বিষক্রিয়াতেই পরিবারটি এই হৃদয় বিদারক ঘটনার শিকার হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদুল আমীন সোমবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। কীভাবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
“আমাদের প্রতিষ্ঠান সকল নিয়ম মেনেই ওই বাড়িতে পেস্টিসাইড দিয়েছে। আমরা মেডিকেল রিপোর্টসহ কোনো রিপোর্টই এখন পর্যন্ত পাইনি। রিপোর্ট পাওয়ার পর তাদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে জানা যাবে।”