পোকা মারতে বাসায় ‘গ্যাস ট্যাবলেট’, দুই সন্তানের মৃত্যু

পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানি বাসায় ওষুধ দিয়ে দুই-তিন ঘণ্টা পরে ঘরে ঢুকতে বলেছিল। পরিবারটি নয় ঘণ্টা পরে বাসায় ঢুকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2023, 10:34 AM
Updated : 5 June 2023, 10:34 AM

পোকামাকড় মারতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এক বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিসের মাধ্যমে ওষুধ প্রয়োগের পর অসুস্থ হয়ে এক ব্যবসায়ীর দুই ছেলের মৃত্যু হয়েছে।

তাদের একজন রোববার সকালে, অন্যজন গভীর রাতে মারা যায় বলে ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শরীফুল ইসলাম জানান।

৯ ও ১৫ বছর বয়সী শিশু দুটির বাবা ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষার ঢাকা উত্তরা রয়েল ক্লাবের সাবেক সভাপতি। তার মেয়ে এখনো অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।

পরিদর্শক শরীফুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাসার পোকামাকড় তাড়ানোর জন্য বারিধারার ‘ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেড' নামের একটি পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন মোবারকম হোসেন তুষার। ওই কোম্পানির কর্মীরা শনিবার বাসায় ওষুধ দিয়ে দুই-তিন ঘণ্টা পরে ঘরে ঢুকতে বলেছিল।

“পরিবারটি নয় ঘণ্টা পরে বাসায় ঢুকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। তাদের সকলেরই পেট খারাপ, বমির মত উপসর্গ দেখা দেয়। রোববার ভোরে নয় বছরের ছোট ছেলেটি মারা যায়। ছোট ছেলেকে দাফন করে আসতে না আসতেই রোববার গভীর রাতে ১৫ বছর বয়সী বড় ছেলের মৃত্যু হয়।”

সোমবার সকালে পুলিশ এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যাওয়া ১৫ বছরের ছেলেটির লাশ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ওই পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সেই পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানি পোকামাকড় নিধনের জন্য এলুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট (গ্যাস ট্যাবলেট) ব্যবহার করেছিল, যেটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। সেই গ্যাসের বিষক্রিয়াতেই পরিবারটি এই হৃদয় বিদারক ঘটনার শিকার হয়েছে।

ভাটারা থানার ওসি আসাদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই শিশুর বাবা এ ব্যাপারে একটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মামলার পর আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদুল আমীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। কীভাবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

“আমরা মেডিকেল রিপোর্টসহ কোনো রিপোর্টই এখন পর্যন্ত পাইনি। রিপোর্ট পাওয়ার পর তাদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে জানা যাবে। আমাদের প্রতিষ্ঠান সকল নিয়ম মেনেই ওই বাড়িতে পেস্টিসাইড দিয়েছে। ওই পরিবারের সাথে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছি।”