গঙ্গার পানি বণ্টনে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সঙ্গে ৩০ বছরের চুক্তি করে।
Published : 26 Jun 2024, 09:10 PM
গঙ্গা নদীর পানি বণ্টনে ভারতের সঙ্গে চুক্তি নবায়নে সরকার আলোচনা শুরু করেছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, নতুন চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান চুক্তি অনুযায়ীই পানি আসতে থাকবে।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, “গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন না হলেও কিন্তু অটোমেটিক চলবে, চুক্তিতে সেভাবে বলা আছে। তবে আমরা নবায়ন করার ব্যাপারে আলোচনা করেছি।”
গঙ্গার পানি বণ্টনে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সঙ্গে ৩০ বছরের চুক্তি করে। সমঝোতা অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ফারাক্কা থেকে দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টন করা হতে থাকে।
৪০ বছরের গড় মাত্রা অনুযায়ী ভারত পানির ভাগ পায়। যে কোনো সংকটের সময় বাংলাদেশকে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি সরবরাহ করার গ্যারান্টিও দেওয়া হয়।
এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে ২০২৬ সাল। ফলে এরপর থেকে বাংলাদেশ কী হারে পানি পাবে, এ নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
গত শনিবার নয়া দিল্লিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, তার সরকার ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে কারিগরি পর্যায়ের আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফরে দুই দেশের আলোচনার টেবিলে তিস্তার প্রসঙ্গও ছিল। সেখানেই দিল্লির পক্ষ থেকে তিস্তা মহাপরিকল্পনায় যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখানো হয়।
তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আলোচনার জন্য ভারতের একটি কারিগরি দল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে বলেও জানান হাছান মাহমুদ।
বক্তব্য দেওয়ার আগে ফখরুলকে পড়াশোনার পরামর্শ
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেল চলাচল নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার আগে একটু পড়াশোনা করতে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পরামর্শ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোর সঙ্গে ভারতের নানা অঞ্চলের যোগাযোগ বহুদিন ধরে। ১৯৬৫ সালের (ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ) পরে অনেক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সেগুলো আবার চালু করা হচ্ছে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “টেক্সটের ভেতরে না গিয়ে, চুক্তি আর সমঝোতার পার্থক্য ‘না বুঝে’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বক্তব্য দিচ্ছেন।
“বিএনপিকে তো কারণে-অকারণে সরকারের বিরোধিতা করতে হবে। আমি উনাকে (ফখরুল) বলব, আগে একটু ভালোমত পড়াশোনা করে তারপর মিডিয়াতে আসার জন্য।
“কোনো চুক্তি হয়নি, সেই সমঝোতা স্মারকগুলো হয়েছে, সেগুলোর সবগুলো বাংলাদেশের স্বার্থে হয়েছে, বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করে হয়েছে।”
গত শুক্র ও শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে মোট ১০টি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এরপর বাংলাদেশের ভূমিতে ভারতের ট্রেন চালানোর বিষয়টি সামনে আসে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, এই সফরে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেল চলাচল নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের কাছ থেকে রেল ট্রানজিট চায় ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন পরীক্ষামূলকভাবে আগামী মাসেই বাংলাদেশ দিয়ে ভারতের রেল চলবে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত বক্তব্য আসেনি। রেল ট্রানজিটের শর্তগুলোও উঠে আসেনি।
রেল কানেক্টিভিটির সমঝোতা বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ঢাকা-কলকাতা, খুলনা-কলকাতা রেল যোগাযোগ বিদ্যমান। ভারতের পাশাপাশি নেপাল, ভুটানসহ আঞ্চলিক রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে কাজ চলছে।”
সুইডেনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা
এদিন ঢাকায় সুইডেনের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ড্রা বার্গ ফন লিন্ডে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী ইউরোপের দেশগুলোর অন্যতম সুইডেন।
“কাপ্তাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ-সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১৯৬০ দশকের শুরু থেকে এবং সুইডিশ এনজিও সিডা বহু বছর ধরে এ দেশে কাজ করছে। আমরা তাদেরকে ‘বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদন’, তথ্যপ্রযুক্তিসহ নানা খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।”
দেশ বিক্রির কথা বলে 'পাকিস্তানের দালালরা': প্রধানমন্ত্রী
'সার্বভৌমত্ব রক্ষায়' কর্মসূচি দেবে বিএনপি