বিভিন্ন নম্বরে ৭৫ হাজার টাকা বিকাশ করেন এক ব্যক্তি, তিনি টাকা দিতে না পারায় গণ্ডগোলের সূত্রপাত।
Published : 15 Jan 2023, 06:57 PM
ঢাকার গুলশানের একটি দোকান থেকে এমএফএসে টাকা পাঠানো নিয়ে ঝামেলার জেরে প্রকাশ্যে এক ব্যক্তি এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছেন, তাতে আহত হয়েছেন এক ভ্যানচালকসহ দুজন।
রোববার গুলশান শপিং সেন্টারের নিচ তলার একটি দোকানে এ ঘটনা ঘটে বলে মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মাসুদুর রহমান মনির জানান।
পুলিশ বলছে, ওই ঘটনায় অস্ত্রধারী ওয়াহিদুজ্জামান মিন্টুসহ (৪৬) তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি দুজন হলেন, মোঃ আরিফ হোসেন (২৪), আরিফের ভগ্নিপতি মনির আহমেদ (৩৫)।
তাদের মধ্যে ওয়াহিদুজ্জামান মিন্টু ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি। তার আটক হওয়ার খবর শুনে তার অনুসারী কিছু নেতাকর্মীও গুলশান থানার সামনে জড়ো হন।
গুলশান শপিং সেন্টারের নিরাপত্তা কর্মী শহীদুল ইসলাম খান জানান, দুপুরের দিকে আলফা জেনারেল স্টোর নামের একটি দোকান থেকে আরিফ হোসেন ৭৫ হাজার টাকা বিকাশ করেন। দোকানের মালিক হাবিবুর রহমান আলিম টাকা চাইলে ওই ব্যক্তি জানান, তার কাছে এত নগদ টাকা নেই। এ নিয়ে দুপুর থেকে বিতণ্ডা চলছিল।
“টাকা দিতে না পারায় মার্কেটের লোকেরা আরিফকে আটকে রাখে। পরে তিনি আত্মীয় বা বন্ধুদের কাছে ফোন করে সাহায্য চান। বিকাল ৪টার দিকে লাল গেঞ্জি পরা (ওয়াহিদ) এক লোকসহ কয়েকজন আলফা জেনারেল স্টোরে এসে উল্টো দোকানদারের ওপর চড়াও হন।
“তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে দোকানদারেরা ধাওয়া দিলে লাল গেঞ্জি পরা লোকটি (ওয়াহিদ) জনতার ওপর গুলি চালায়। এরপর তিনি পাশের গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফেতে ঢুকে পড়েন। সেখান থেকে পুলিশ তাদের আটক করে।”
নিরাপত্তাকর্মী শহিদুল বলেন, আরিফ প্রতারণার শিকার হয়ে বিভিন্ন নম্বরে ৭৫ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন বলে স্থানীয় দোকানদের বলছিলেন।
ঘটনাস্থলে থাকা পিকাপ চালক আলমাস বলেন, “লোকটি (ওয়াহিদ) জনতার দিকে তাক করে অন্তত দুটি গুলি ছোঁড়েন। সেইসঙ্গে উপরের দিকে অস্ত্র তাক করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন।”
তাতে সেখানে থাকা দুজন আহত হন। তারা হলেন: ভ্যানচালক আব্দুর রহিম মিয়া (৫০) এবং প্রাইভেট কার চালক মো. আমিনুল ইসলাম। রহিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং আমিনুলকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
আটক ওয়াহিদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, ১৬ রাউন্ড গুলি এবং চারটি ম্যাগাজিন জব্দ করার কথা জানিয়েছেন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার আব্দুল আহাদ।
রাতে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আরিফ হোসেন থাকেন ওমানে। দোকানে গিয়ে ৭৫ হাজার টাকা বিভিন্ন নম্বরে পাঠিয়ে আর টাকা পরিশোধ করছিলেন না।
“পাশেই কাঁচাবাজার, দোকানদাররা তাকে আটকে রাখলে তিনি তার ভগ্নিপতি মনির আহমেদকে আসতে বলেন। কিছুক্ষণ পর ওয়াহিদ মিন্টু ও মনির সেখানে আসেন। দোকানদারেরা তাদের ধাওয়া দিলে মিন্টু তার লাইসেন্স করা অস্ত্র থেকে সাত-আট রাউন্ড গুলি ছোড়েন।”