“মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোক তাৎক্ষণিক সতর্ক করা হয়েছে। মানসম্পন্ন বই না পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান।
Published : 12 Dec 2024, 01:03 AM
আগামী বছরের জন্য প্রস্তুত করা ‘মানহীন’ ৯০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
কয়েক দিন ধরে মোট পাঁচটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে মনিটিরিং পরিদর্শন চালিয়ে ‘নিম্নমানের কাগজে ছাপানো, মুদ্রণ ও বাইন্ডিংয়ে ত্রুটি থাকায়’ বিভিন্ন শ্রেণির এসব বই বাতিল করে ধ্বংস করা হয়।
নতুন বছরে নতুন বই হাতে ক্লাসে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর স্কুল পড়ুয়া সোয়া তিন কোটি শিক্ষার্থীর হাতে ঠিক সময়ে বই পৌঁছানো যাবে কিনা, তা নিয়ে যখন সংশয় দেখা দিয়েছে, তখনি এ বই ধ্বংসের খবর এল।
বুধবার বিকালে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মনিটরিং পরিদর্শনে গিয়ে নিম্নমানের কাগজে ছাপানো, মুদ্রণ ও বাইন্ডিংয়ে ত্রুটিসহ বিভিন্ন কারণে ওই বইগুলো বাতিল করে ধ্বংস করা হয়েছে।
“ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাৎক্ষণিক সতর্ক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে মানসম্পন্ন বই না পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার মানসম্পন্ন পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে চায়, সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে এনসিটিবি কাজ করছে।”
এনসিটিবির তথ্য বলছে, অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস ও কর্ণফুলী আর্ট প্রেসের তৈরি ৫০ হাজার বই, ফারাজি প্রেস অ্যান্ড পাবের তৈরি ২৫ হাজার বই, আনন্দ প্রিন্টার্সের তৈরি ১০ হাজার বই এবং লেটার এন কালার লিমিটেডের তৈরি ৫ হাজার বই বাতিল ঘোষণা করে ধ্বংস করা হয়েছে।
ফারাজি প্রেস অ্যান্ড পাবের স্বত্ত্বাধিকারী মো. শাহজাহান ফারাজী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাইন্ডিংয়ে ত্রুটি থাকার অভিযোগ তুলে তারা ওই বইগুলো ধ্বংস করেছে।”
লেটার এন কালার লিমিটেডের প্রতিনিধি এ কে এম রাশেদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বার্স্ট ফ্যাক্টর কম থাকার অভিযোগে আমাদের ওই বইগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।”
অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস ও কর্ণফুলী আর্ট প্রেসের মালিকানার একজন অংশীদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এনসিটিবির কর্মকর্তারা পরিদর্শন মনিটরিংয়ে এসে কিছু বই নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তারা ওইসব বই আলাদা করে রেখেছেন।
“একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ যদি সর্বশক্তি প্রয়োগ করে বইয়ের মলাট হেচকা টান দেন তবে তা ছিঁড়বেই; যত ভালো বাইন্ডিংই হোক না কেন। তবে তারা বলতে চাচ্ছেন বই মানসম্মত হয়নি।”
আগামী বছরের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪০ কোটি ১৬ লাখ কপি পাঠ্যবই ছাপার কাজ চলছে।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১ কোটি ৯৭ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ১০ কোটি কপির বেশি নতুন বই হাতে পাবে। মাধ্যমিক পর্যায়ের ১ কোটি ২১ লাখ শিক্ষার্থী আগামী বছর প্রায় ৩০ কোটি বই পাবে।
গত কয়েক বছরে পাঠ্যবই ভারতে ছাপা হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরের বাস্তবতায় এবার দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই ছাপার কাজ করবে। কিন্তু কাগজ সংকটে বই ছাপার কাজ চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।