টানা চারবারের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে সরকার পতনের পর থেকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
Published : 19 Nov 2024, 12:13 AM
রাজধানীর উত্তরায় গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম।
সোমবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ টানা চারবারের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে বলে তথ্য দিয়েছেন ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
এক বার্তায় তিনি বলেন, রাজধানীর উত্তরা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় কয়েকটি মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও ঢাকা ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।
তবে কোন মামলায় তাকে আটক করা হয়েছে সে বিষয়ে বার্তায় কিছু জানায়নি ডিএমপি।
ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীসহ সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী নেতাদের গ্রেপ্তারের মধ্যে সবশেষ সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামের গ্রেপ্তারের খবর এল।
সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অন্য অনেক প্রভাবশালী নেতাদের মত রাজনীতিবিদ এই আইনজীবীকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী এই নেতা ২০০৮ নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে আসেন। এরপর থেকে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ পর্যন্ত টানা চারবার জয়ী হন।
নবম সংসদে জয়ের পর ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় তিনি আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য সরকারের পরের মেয়াদে ২০১৪ সালে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে পরের দুই মেয়াদের মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি।
আইন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব পালনকালে ২০০৯ সালে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে সময় টেলিভিশন। পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শেষে যা ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল বাণিজ্যিক সম্প্রচারে আসে।
লাইসেন্স নেওয়ার সময়কালে এ টেলিভিশন স্টেশনে তৎকালীন মন্ত্রী কামরুলের ভাগ্নে আহমেদ জোবায়েরের নামে ৯৩ শতাংশ শেয়ার ছিল। ব্যবসায়িক ও পারিবারিক সূত্রের তথ্য, এর মধ্যে ৯০ শতাংশ শেয়ার কামরুল ইসলামের হলেও কাগজে কলমে তা ছিল আহমেদ জোবায়েরের নামে।
অন্য অংশীদারদের মধ্যে কামরুল ইসলামের ভাই মোরশেদুল ইসলামের ৩ শতাংশ শেয়ার ছিল।
ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
তার বিরুদ্ধে দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজ নামে ও সন্তানদের নামে দেশে বিদেশে অঢেল সম্পদ গড়েছেন তিনি। আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিম্ন আদালতে অধিকাংশ কর্মচারীর নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে ব্রাজিল থেকে নিম্নমানের গম ক্রয় করে সরকারি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।