দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন।
Published : 08 Apr 2025, 04:59 PM
দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
এই দুজনেরই স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন।
সাবেক এমপি মুকুলের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা হলেন-জাহানারা ইয়াসমীন, রায়হান আবিদ অমি এবং মেয়ে আমেনা আজম অর্শি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের স্ত্রী নাজমা রহমান এবং দুই ছেলে হলেন ফুয়াদ এন এ রহমান ও ফারাবী এন এ রহমান।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ”সাবেক এমপি মুকুল পরিবারের এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন।“
মুকুলের পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক পিয়াস পাল।
আবেদনে বলা হয়, আলী আজম মুকুল এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জন, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।
তারা দেশত্যাগের চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশ পালিয়ে গেলে তদন্ত কার্যক্রম দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তাই অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন দুদক।
নজিবুর রহমান পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা কমিশনের উপপরিচালক মো. খায়রুল হক।
আবেদনে বলা হয়, নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, বদলী বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। দুদক জেনেছে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন দুদক।
সরকার পতনের পর গত বছরের নভেম্বরে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে সাবেক এমপি মুকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ২০১৪ প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয়াবরের মত জয়ী হন তিনি।
এর আগে মুকুল ভোলার দৌলতখান পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।
গত ৬ অক্টোবর নজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর পল্টন থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পরে তাকে হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
২০১৫ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয় নজিবুর রহমানকে৷
২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর তাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নতুন মুখ্য সচিব করা হয়। ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর তিনি চাকরি থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে যান।
সরকার পতনের আগে সাবেক এই আমলা ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ ব্যবস্থাপনায় গঠিত বোর্ড অব গভর্নসের চেয়ারম্যান ছিলেন।