“ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে আমি পাবলিক প্রসিকিউটর পদে যোগদান করতে অপারগ," ভাষ্য তার।
Published : 29 Aug 2024, 03:22 PM
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পদে যোগদান করবেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।
নিয়োগ পাওয়ার দুই দিনের মাথায় তিনি ‘ব্যক্তিগত ও পারিবারিক’ কারণ দেখিয়ে ওই দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগে পাঠানো এক চিঠিতে সমাজী নিজের অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
সমাজী লিখেছেন, "ঢাকা আইনজীবী সমিতির নিয়মিত সদস্য হিসেবে প্রায় ৩৮ বছর ধরে পেশাগত মর্যাদাকে প্রাধান্য দিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছি। তবে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে আমি পাবলিক প্রসিকিউটর পদে যোগদান করতে অপারগ।"
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে নিয়োগ পাওয়া পিপি আবদুল্লাহ আবুকে সরিয়ে এই পদে সমাজীকে আনা হয়।
ওইদিন আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর অনু-বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ রববদলের কথা জানানো হয়। সমাজী আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের ২০০৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এ আদালতের পিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পিপি পদে সমাজীকে নিয়োগ দেওয়ার পরপরই বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সামবেশ করে তার নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান। তাদের (বিএনপিপন্থি আইনজীবী) অভিযোগ ছিল, সমাজী আওয়ামীপন্থি আইনজীবী হিসেবে পরিচিত।
প্রতিবাদকারীরা সমাবেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পদত্যাগ না করলে সমাজীকে তার দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হবে না।
এর আগে বুধবার সমাজী বলেছিলেন, "আমাকে পিপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি, তবে মন্ত্রণালয় থেকে এখনো কোনো চিঠি পাইনি।
"আইন পেশায় আমি সুপ্রতিষ্ঠিত, আমার মর্যাদা বজায় রাখতে চাই। যদি দশজন আইনজীবীও আমার বিরোধিতা করে, তাহলে আমি এই পদে থাকব না।"
এহসানুল হক সমাজী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৪ সালের এলএলবি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে এলএলএম ডিগ্রি নেন।
তিনি ১৯৮৬ সালে নিম্ন আদালতের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৮৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত হন।
সমাজী ১৯৮৬ সালে বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসেবে তালিকার্ভুক্ত হন। তিনি ফৌজদারি বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ ও দক্ষ আইনজীবী হিসেবে পরিচিত। বহু আলোচিত হত্যা ও দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তদের পক্ষে তিনি মামলা লড়েছেন।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তনের হাওয়ায় দেশের প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগ এবং অ্যাটর্নি জেনারেল বদলে যায়। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ, জেলা ও দায়রা জজ, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম, মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালদে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা অনুপস্থিত থাকায় বিচারে সংকট তৈরি হয়।
আরও পড়ুন