আইনজীবী বাহাউদ্দিন আল ইমরান বলেন, বাংলাদেশি রোগীদের জন্য ব্যবহৃত ভ্যাকসিনটি ভারত থেকে আমদানি করা। সেই ভ্যাকসিনটি ভারতের সাপের ধরণ ও পরিবেশ উপযোগী করে তৈরি করা।
Published : 25 Jun 2024, 04:51 PM
রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসায় দেশের প্রতিটি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অ্যান্টিভেনমের পর্যাপ্ত সরবরাহ, দক্ষ চিকিৎসক ও দেশে অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. বাহাউদ্দিন আল ইমরান মঙ্গলবার জনস্বার্থে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ নোটিস পাঠান।
নোটিসে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী পরিচালিত অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি) সাপে কামড়ানোদের ওপর জরিপ চালিয়েছে। ২০২৩ সালে তাদের প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, দেশে প্রতিবছর ৪ লাখ ৩ হাজার ৩১৭ জন মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয় এবং এতে ৭ হাজার ৫১১ জন মানুষ মারা যায়। মানুষ ছাড়া প্রতি বছর প্রায় ১৯ হাজার গৃহপালিত পশু সর্পদংশনে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে আড়াই হাজার গৃহপালিত পশু মারা যায়। ফলে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়।
এতে আরও বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর অনেকে বিষধর সাপের কামড় খেয়ে মারা যান শুধু সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পাওয়া, বিশেষ করে হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম না থাকার কারণে। কারণ, বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে কোনো অ্যান্টিভেনম তৈরি হয় না। দেশে সাপের কামড়ের চিকিৎসায় এখন যেসব অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা হয় তা ভারত থেকে আসে।
দেশের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন নেই বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাই ওই নোটিস পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে সারা দেশের হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম ভ্যাকসিন সংরক্ষণ, ভ্যাকসিন প্রদানকারী চিকিৎসকদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে উন্নত প্রশিক্ষণ, দেশের অভ্যন্তরে পরিবেশ উপযোগী সাপের বিষের প্রতিরোধক ভ্যাকসিন উৎপাদনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অন্যথায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রতিকার চেয়ে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হবে বলে নোটিসে জানানো হয়েছে।
আইনজীবী বাহাউদ্দিন আল ইমরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাসেলস ভাইপার সাপের কামড় নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এটি আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকক্ষেত্রে অ্যান্টিভেনম ভ্যাকসিন দিলেও রোগীকে সুস্থ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। যার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশি রোগীদের জন্য ব্যবহৃত ভ্যাকসিনটি ভারত থেকে আমদানি করা। সেই ভ্যাকসিনটি ভারতের সাপের ধরণ ও পরিবেশ উপযোগী করে তৈরি করা।
“তাই আমাদের দেশের পরিবেশ অনুযায়ী অ্যান্টিভেনম তৈরি করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নয়তো সাপের কামড়ে বছরে মানুষের মৃত্যুর হার দিন দিন বৃদ্ধি পাবে এবং একই কারণে গবাদিপশুও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যে কারণে সচেতন নাগরিক হিসাবে এ নোটিস পাঠয়েছি।”