সিইসি বলার পর ত্বরিত প্রতিক্রিয়া দেখাল আইন মন্ত্রণালয়।
Published : 29 Nov 2022, 11:30 PM
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাবগুলো গুরুত্ব দিয়েই যাচাই করা হচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
সাড়ে তিন মাসে কোনো ধরনের সাড়া না পাওয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ‘বিশেষ অনুরোধের’ পরদিনই মন্ত্রণালয় ত্বরিত প্রতিক্রিয়া দেখায়।
মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে ইসি সচিবের কাছে চিঠি আসে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, “মঙ্গলবারই লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর স্বাক্ষরিত পত্র আমরা পেয়েছি।
“সার্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলেই বিল আকারে মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।”
আইন মন্ত্রণালয় আরপিও সংশোধন প্রস্তাব নিয়ে চিঠিতে কোনো ধরনের প্রশ্ন রাখেনি বলে জানান তিনি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে অগাস্টে আরপিও সংশোধনে একগুচ্ছ প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
এরপর সরকারের কোনো সাড়া না পেয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর, ১০ অক্টোবর ও সবশেষ ২৭ নভেম্বর অগ্রগতি জানতে চেয়ে তিন দফা চিঠি দেয়।
ভোটে অনিয়ম রোধে ও প্রার্থিতায় কিছু বিধান, রাজনৈতিক দলের সব স্তরের কমিটিতে ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাবসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রস্তাব করে ইসি।
সাড়া না পেয়ে সিইসি হাবিবুল আউয়াল রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরাও তো অনন্ত কাল ধরে একটা ম্যাটার পার্সু করতে পারি না। বিষয়টা আমরা শেষ করে দিতে চাই। রেসপন্স না পেলে আমরা অন্য কাজে রেসপন্স করব।”
১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জবাব না পেলে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে ‘জনমনে সংশয় তৈরি হতে পারে’ বলে সতর্ক করে ইসি।
এর পরপরই আইন মন্ত্রণালয়ের চিঠি এল ইসিতে।
আরপিও সংশোধন: সরকারের ভাবনা জানাতে ‘শেষ দফা’ চিঠি ইসির
‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম চলমান’
আইন মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়, আরপিও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নীতি-নির্ধারণী বিষয়। দেশের সংবিধান এবং বিদ্যমান আরপিওর বিধানগুলোর সঙ্গে নতুন প্রস্তাবগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, সে বিষয়সহ সার্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ সরকারের নির্বাহী বিভাগের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে সর্বদা সহায়তা দিয়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে বলে উল্লেখ করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে বলা হয়, ইতোপূর্বে নির্বাচন কমিশন থেকে আরপিওসহ নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য যে সব আইন, বিধি, প্রবিধি, প্রজ্ঞাপন ইত্যাদি নূতনভাবে প্রণয়ন বা সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, সে সব প্রস্তাব ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ দিয়ে সূচারুরূপে সম্পন্ন করেছে।
“আরপিও-এর প্রস্তাবিত সংশোধনসমূহের ওই রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া মাত্রই বিল আকারে প্রস্তুতপূর্বক নীতিগত/চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরপিওর ৭, ১২, ১৫, ২৫, ৩১, ৩৬, ৪৪, ৮৪, ৯০, ৯১ অনুচ্ছেদসহ বেশ কিছু ধারা-উপধারায় সংযোজন-বিয়োজন ও করণিক সংশোধনের প্রস্তাব রেখেছে ইসি।
ভোটের সময় কোনো অভিযোগ পেলে কমিশন খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে পারে বিদ্যমান আইনে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটের সময়ের পর থেকে ফলাফল প্রকাশের পর, এমনকি গেজেট প্রকাশের আগে নির্বাচনের যে কোনো পর্যায়ের অভিযোগের ক্ষেত্রে কমিশন যেন তদন্ত করতে পারে এবং অনিয়মের প্রমাণ পেলে ভোট বাতিল করতে পারে, এজন্য ৯১ অনুচ্ছেদে দুটি উপধারা সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।