জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে উন্নত চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন; দুজনের ক্ষতিগ্রস্ত চোখে উন্নতির আশা ’কম’ বলেছেন চিকিৎসকরা।
Published : 24 Feb 2025, 09:48 PM
সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল আই সেন্টারে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন জুলাই গণ অভ্যুত্থানে আহত চারজন।
তারা চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন।
সোমবার দেশে ফেরা চারজন হলেন ইয়ামিন শেখ, মো. রমজান, সালমান বিন শোয়েব ও জুবায়ের।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তারা ফিরেছেন।
আহতদের একজন সালমান বিন শোয়েব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ৫ অগাস্ট ঢাকার রামপুরায় পুলিশের ছররা গুলিতে আহত হন তিনি। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলি লাগে, একটি গুলি লাগে ডান চোখে।”
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেওয়ার পর এখন কী অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আহত হওয়ার পর ঢাকায় আমার পাঁচটা অপারেশন হয়েছিল। সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর চিকিৎসকরা দেখে বলেছেন, গুলি বের করা সম্ভব না। এটা করতে গেলে বাম চোখেও সমস্যা হতে পারে। তারা বলেছেন, একমাত্র সমাধান রেটিনা ট্রান্সপ্লান্ট করা। আর এখন আপাতত বাংলাদেশের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।”
গুলিতে ডান চোখ হারানো ইয়ামিন শেখ নামে আরেকজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তার চোখেরও কোনো উন্নতির আশা দেখছেন না চিকিৎসকরা।
“ডাক্তাররা বলেছেন ডান চোখ আর ঠিক হবে না। এটা সার্জারি করতে গেলে বাম চোখটাও হারানোর শঙ্কা আছে। রেটিনা ট্রান্সপ্লান্ট করা যায়। তবে সেটা শুরুতে করতে পারলে ভালো হতো। কারণ যত সময় যায় নার্ভ শুকিয়ে যায়। আমি চোখে গুলি খেয়েছি ছয় মাস হয়ে গেছে।”
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের শুরুতে যে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়, তা তীব্র আকার ধারণ করে ১৫ জুলাইয়ের পর।
আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে সহিংসতাও। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।
আন্দোলনে হতাহতদের তালিকা তৈরি করতে গত ১৫ অগাস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখা আহত ও নিহতদের তালিকা তৈরি করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হালনাগাদ তথ্য বলছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মোট ৮৪৩ জন নিহত হয়েছে। সরকারি হিসাবে এসময় আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৩ জন।
ওই সময় পুলিশের গুলিতে অনেকেই দৃষ্টিশক্তি হারান। ঢাকায় চিকিৎসার পর তাদের অনেককেই উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার।