”আমার ছোট বাচ্চাটা খালি বাপ আর মারে চেনে। আর কাউরো কাছেও যায় না। আমার বাচ্চাগুলানরে আমি কী দিয়া বুঝ দিমু, আমারে খালি সেইটা কইয়া যান,” বলেন লাকী আক্তার।
Published : 31 Aug 2024, 11:11 PM
একটি ভ্যানে একটির ওপর আরেকটি নিথর দেহ স্তূপ করে রাখার যে ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়েছে সেটি সাভারের আশুলিয়া থানার ঠিক পাশের ঘটনা বলে স্থানীয়রা শনাক্ত করেছেন। সেই ভিডিওতে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা দেহগুলোর স্তূপ থেকে ব্রাজিলের জার্সি পরিহিত একটি হাত বের হয়ে থাকতে দেখা যায়। সেই হাত দেখে ওই ব্যক্তিকে স্বামীর লাশ হিসেবে শনাক্ত করেছেন এক নারী।
লাকী আক্তার নামের ওই নারী বলছেন, রিকশা ভ্যানে থাকা ওই ব্যক্তি তার স্বামী আবুল হোসেন। এক সময় পোশাক কর্মীর কাজ করা এ নারীর প্রতিবেশীরাও ওই হাত আবুল হোসেন হওয়ার কথা বলছেন, যিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবর শুনে ব্রাজিলের জার্সি পরেই ঘর থেকে বেড়িয়েছিলেন।
লাকী আক্তার গত ৫ অগাস্ট থেকে তার স্বামী দিনমজুর আবুল হোসেনের নিখোঁজ থাকা নিয়ে আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন।
ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলমুখী মহাসড়ক ধরে ঢাকার বাইপাইল মোড় থেকে সামান্য এগিয়ে হাতের বাঁয়ে চলে যাওয়া গলিপথ ধরে কয়েকটি বাড়ি পরেই আশুলিয়া থানা। এলাকাটি পশ্চিমপাড়া হিসেবে পরিচিত।
রোববার আশুলিয়া থানা এলাকায় গিয়ে কথা বললে স্থানীয়রা ভিডিওটি সেখানকার বলে নিশ্চিত করেছেন।
সেখানকার বাসিন্দারা বলছেন, ভিডিওটিতে যে ভ্যানে রক্তমাখা নিস্তেজ দেহগুলো তুলতে দেখা গেছে সেটি দাঁড়ানো ছিল থানার কোনায় জামে মসজিদের ঠিক পেছনে গলির ওপরে। সময় তখন (৫ অগাস্ট) বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টা। এর কিছুক্ষণ পর সড়ক থেকে দেহগুলো ওই ভ্যানে তোলা হয়।
স্থানীয়দের কয়েকজন বলেন, ওই ভ্যানে ছয়জনের নিথর দেহ তোলা হয়েছিল-যারা আগেই মারা গিয়েছিল বলে তাদের ধারণা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবরে ৫ অগাস্টের সেই বিকেলে স্থানীয় জনতা আশুলিয়া থানায় আক্রমণ করে। তখন থানা থেকে এলোপাথারি গুলি করা হয়।
তারা বলেন, পরে পুলিশ চলে যাওয়ার পর থানার সামনে থেকে পুলিশের একটি লেগুনা জ্বলতে দেখা যায়। পরিস্থিতি শান্ত হলে জনগণ সেই আগুন নেভানোর পর সেখানে কয়েকটি পোড়া লাশ দেখতে পায়।
এলাকাবাসী বলছেন, সন্ধ্যার দিকে সেই ভ্যানে থাকা লাশগুলোকে গুম করতে পুলিশের একটি লেগুনায় তোলা হয়েছিল। পরে জনতার হামলার মুখে নিজেদের দায় এড়াতে ওই লেগুনায় আগুন দিয়ে লাশগুলো পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়। আগুনে লেগুনায় থাকা লাশগুলো সব পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়।
পরের দিন সেখানে ছয়টি পোড়া লাশ উদ্ধার উদ্ধার করা হয়। সেগুলোর মধ্যে চারটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকি দুইজনের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে নিকটবর্তী আমতলী গোরস্থানে দাফন করা হয়।
তবে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে এ বিষয়ে তথ্য নেই। ভ্যানের সেই নিথর দেহ বা লাশগুলো কোথায় গেল সেটিও জানে না পুলিশ। ভ্যানের লাশগুলোই কি লেগুনায় তোলা হয়েছিল কি না সে তথ্যও নেই তাদের কাছে।
ঢাকা জেলার এসপি আহম্মদ মুইদ দায়িত্ব নিয়েছেন গত বৃহস্পতিবার। এ বিষয়ে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। তবে এখনও জানি না সেখানে কতগুলো লাশ ছিল। আর লাশগুলো কোথায় গেল সে তথ্যও এখনো জানা যায়নি।
”এদিকে কিছু শ্রমিক অসন্তোষ চলায় গত দুদিন সেদিকে বেশি মনোযোগ দিতে হয়েছে। তবে কাজ যেহেতু শুরু হয়েছে আশা করছি অচিরেই সব জানা যাবে।“
ব্রাজিলের জার্সি ও মোটা কনুই দেখে স্বামীকে শনাক্ত
লাকী আক্তার ও আবুল হোসেন দম্পতি থাকতেন বাইপাইল পশ্চিম পাড়ায় একটি ভাড়া বাড়ির ঘরে। তাদের দুই সন্তান-বড়টির বয়স নয় বছর, ছোটটি সবে ছয় মাস।
৩৩ বছরের আবুল হোসেন দিন মজুরির ভিত্তিতে ট্রাক থেকে মালামাল নামানোর কাজ করতেন। লাকী সেখানকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তবে ছোট বাচ্চাটির জন্মের পর শারীরিক কারণে কাজ ছাড়তে বাধ্য হন। সংসারটি চলছিল পুরোপুরি আবুল হোসেনের রোজগারে।
আবুল হোসেন নিখোঁজ হওয়ার পর বড় সন্তানটিকে স্বজনের জিম্মায় রেখে ছোটটিকে কোলে নিয়ে স্বামীকে খুঁজে খুঁজে বেড়াচ্ছেন লাকী। শনিবার তার ভাড়া বাসায় কথা হয় তার সঙ্গে। কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বারবার। বলছিলেন, তার সন্তানদের এখন কী হবে?
লাকী আক্তার বলছেন, গত ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন আবুল। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ছয় মাসের বাচ্চা কোলে লাকী এই কয়দিন ধরে হাসপাতাল, মর্গ, কারাগার, থানা থেকে শুরু করে সেনানিবাসে পর্যন্ত স্বামীর খোঁজে গিয়েছেন। পরে শুক্রবার রাতে তার একজন আত্মীয়কে কেউ একজন ভিডিওটি পাঠিয়ে দেখতে বলেন। আত্মীয়টি সেটি তাকে দেখালে তিনি স্বামীকে চিনতে পারেন। প্রতিবেশীরাও ওই ভিডিও দেখে তাকে আবুল হোসেন বলে শনাক্ত করেছেন।
১ মিনিটি ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায় একটি ব্যাটারিচালিত অটো ভ্যানের ওপর ছয়-সাতজনের নিস্তেজ দেহ স্তুপ করে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা। সেই স্তূপের ওপর আরেকটি দেহ চ্যাংদোলা করে তুলছিলেন দুইজন। তাদের মধ্যে ভিডিওতে পুলিশের হেলমেট ও ভেস্ট পড়া একজনকে দেখা যায়।
সেই সময়ই ভ্যানে ঢাকা চাদর কিছুটা সরে গিয়ে আরও দেহের নিচে চাপা পড়ে থাকা একজনের হাত বের হয়ে যায়। দুই-তিন সেকেন্ডের সেই হাতের ছবি দেখে তাকে আবুল হোসেন বলে শনাক্ত করছেন তার স্ত্রী, স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
লাকী আক্তার বলছেন, সেদিন দুপুর ১২টার দিকে ব্রাজিল ফুটবল দলের একটি হলুদ রঙের জার্সি আর লুঙ্গি পড়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। ওই এলাকায় তারা এক যুগ থেকে থাকছেন।
আশপাশে অনেকেই চেনেন আবুলকে। বাইপাইল মসজিদ থেকে যখন আসরের আজান হচ্ছিল তখনও মসজিদের পাশেই তাকে দেখেছেন স্থানীয়রা। লাকীর দাবি এই হলুদ জার্সি আর লুঙ্গি তার পরিচিত। আর আবুলের হাতটা চিকন হলেও হাতের কনুইটা অস্বাভাবিক রকমের মোটা ছিল, ছবিতে যেটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
লাকীর সঙ্গে কথা বলতে বলতে আশপাশের কিছু লোকজন সেখানে জড়ো হন। তারাও সবাই ভিডিওটি দেখে বলছেন, হলুদ জার্সি পড়া হাতটাই হচ্ছে আবুলের। তারাও বলছেন, আবুলের কনুই মোটা ছিল আর ৫ অগাস্ট তিনি হলুদ জার্সি পড়েই বের হয়েছিলেন। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তাকে বিজয় মিছিলে দেখা গিয়েছিল। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই।
আবুল হোসেনের প্রতিবেশী একটি গ্যারেজের ম্যানেজার ইনসান আলী বলেন, ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে একটি বিজয় মিছিলে আবুল হোসেনকে দেখেছিলেন তিনি। আবুলের পিছু পিছু কিছু দূর গিয়েছিলেনও। পরে তিনি ফিরে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় বৃষ্টির মতো গুলি।
লাকী আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়ে বলছিলেন, “ওতো কামলাগিরি করতো। কামলার মতো কাপড় পইড়াই বাইর হইছিল। ওতো কোনো রাজনীতি করতো না। ওরে কেন গুলি করলো। আমার ছোট বাচ্চাটা খালি বাপ আর মারে চেনে। আর কাউরো কাছেও যায় না। আমার বাচ্চাগুলানরে আমি কী দিয়া বুঝ দিমু, আমারে খালি সেইটা কইয়া যান।”
সেদিন কী ঘটেছিল?
লাকী আক্তার বলছেন, ৫ আগস্ট দুপুরে দিকে তিনি মাইকিং শোনেন যে ‘যদি মুসলমান হন তাহলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন’। এ রকম মাইকিং শুনেই বাড়ি থেকে বের হন আবুল হোসেন। সঙ্গে ফোনটাও নিয়ে যাননি, তার কাছে আইডি কার্ডও ছিল না।
স্বামী বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর গোলাগুলির শব্দ শুনে তিনি ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে খুঁজতে যান। গিয়ে দেখেন গলির মুখেই টিয়ার শেল মেরেছে। তিনি ফেরত আসেন।
লাকীর প্রতিবেশী রিকশাচালক মোকসেদ আলী বলছেন, “একদিকে আমরা শুনতেছি হাসিনা পলাইছে। আর আমাদের এদিকে পুলিশ সমানে টিয়ার গ্যাস মারছে। সবাই যে যার বাড়িতে গিয়া ঢুকছে। থানার ওদিক থাকি পুলিশ খুব টিয়ারগ্যাস মারছে, গুলিও করছে। সন্ধ্যা পৌনে ৮টা পর্যন্ত গুলি হইছে। পরে শুনছি আর্মি আসি পুলিশগুলাক নিয়া গেছে।”
ফুটপাথে ফল বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের সংবাদে বিজয় মিছিল থেকে কিছু মানুষ আশুলিয়া থানায় ইট-পাটকেল ছুঁড়ে আক্রমণ শুরু করলে থানা থেকে বৃষ্টির মতো গুলি আর টিয়ারশেল ছোঁড়া হয়। এসময় পাশের মসজিদের মাইক থেকে ‘পুলিশ স্যালেন্ডার করবে’ (আত্মসমর্পণ) বলে মাইকিং করা হয়। কিন্তু লোকজনকে থামানো যায়নি। পরে পুলিশ গুলি করলে অনেকেই হতাহত হয়।
ভিডিওটি দেখে আলী হোসেন ধারণা করছেন, বিকেলে রাস্তায় জমায়েত হওয়া লোকজনকে লক্ষ্য করে পুলিশ যে গুলি চালিয়েছিল তাতে অনেকেই হতাহত হন। যাদের লাশ ভ্যানে করে সরিয়ে ফেলা হয়।
যে ভ্যানে সেদিন দেহগুলো স্তূপ করে রাখার পর আগুন দেওয়া সেটি কার আশপাশের গ্যারেজগুলোতে খোঁজ করেও সেই তথ্য পাওয়া গেল না।
তবে আলী হোসেন বলেন, ওই লাশগুলোই পরে লেগুনায় (পুলিশ ভ্যান) করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল পুলিশ। পরে ভ্যানটি মহাসড়কে উঠতে না উঠতেই জনরোষের মুখে পড়ে।
“মানুষ হই হই করে আসতে থাকলে তারা (পুলিশ) ভ্যানে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।“
পুলিশই যে ভ্যানে আগুন দিয়েছে সেটি দেখেছেন কি না জানতে চাইলে আলী হোসেন বলেন, “আমি দেখি নাই। আমরা দূর থিকা দেখছি আগুন জ্বলতাছে। তখন গুলি হচ্ছে থানা থিকা। সবাই যে যার জান নিয়া ভাগছে।”
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবিদার এক তরুণ বলেন, লাশবাহী ভ্যানটিতে সাদা পোশাক বা সাধারণ পোশাক পড়া লোকজনই আগুন লাগিয়েছে। একটু খুঁজলে ভিডিও পাওয়া যেতে পারে। তবে তারা পুলিশ কী না তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
কতজনের লাশ ছিল পুড়ে যাওয়া ভ্যানে?
থানার কাছেই আশুলিয়া প্রেস ক্লাব। সেখানকার স্থানীয় একজন সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৬ অগাস্ট ভোর ৬টার দিকে তিনি মহাসড়কের পাশে থাকা একটি লেগুনাতে কয়েকটা লাশ পোড়া অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। আশপাশে অনেকে মানুষ ভিড় করে ছিল তখন। লাশের সংখ্যা কেউ গুণে দেখেনি, তবে সেটা তিনের অধিক হবে। কেউ বলছে পাঁচ-ছয়টা হতে পারে। আগুনে পোড়া লাশগুলো সারাদিনই সেখানে পড়ে ছিল। বিকেলের দিকে দুই-একজন স্বজন এসে লাশগুলো নিয়ে যায়। পরে লাশগুলো সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেও আত্মীয় স্বজনেরা লাশ শনাক্ত করে নিয়ে আসেন।
মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব নামে স্থানীয় একজন ফেইসবুকে লিখেছেন, “এখানে (ভ্যানে) মোট ছয়টা লাশ ছিল। পরবর্তীতে ছয়টা লাশ পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়। ৩টার পর যখন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে তখন বিক্ষুব্ধ জনতা থানা ঘেরাও করে। পুলিশ এই জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য লাশ গায়ের করার চেষ্টা করে কিন্তু পারেনি। শেষ চেষ্টা হিসেবে ৬ জনের লাশসহ গাড়িতে কেরোসিন তেল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনার অবস্থান আশুলিয়া থানার সামনের গলি। পরে পুলিশ চলে যাওয়ার পর জনগণ তা নিভিয়ে ফেলে।”
ওই পোস্টে তিনি দাবি করেন, পরের দিন সেনাসদস্যরা তিনি ও কয়েকজনের উপস্থিতিতে চার লাশগুলো হস্তান্তর করে। বাকি দুইজনের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে নিকটবর্তী আমতলী গোরস্থানে দাফন করার কাজ করেন তিনি।
এ ঘটনা নিয়ে গত ২৪ অগাস্ট বেসরকারি মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশের ওই ভ্যান থেকে যে লাশগুলো উদ্ধার হয়েছিল তাদের একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর গ্রামের বিটঘর গ্রামের শফিকুল ইসলামেরে একমাত্র ছেলে তানজীল মাহমুদ সুজয়। ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল সুজয়ের।
সুজয়ের আত্মীয় আল আমিন ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ”পুলিশের ভ্যানে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ-আহত ব্যক্তি ছিলেন। পুলিশ যাওয়ার সময় ভ্যানটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে যায়। ওই পিকাপে যে ১১ জন ছিল একটা ধ্বংসযজ্ঞ পরিণতি হয়। আমরা যখন ওকে কোথাও পাচ্ছিলাম না তখন পিকাপে পোড়া অবস্থায় ওর লাশ শনাক্ত করি।”
তবে সেখানে কতগুলো পোড়া লাশ ছিল কিংবা লাশগুলোর পরে কী হল সেই তথ্য নেই পুলিশের কাছেও। আশুলিয়া থানায় গিয়ে এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি। থানার বর্তমান পুলিশ সদস্যরা নতুন যোগ দিয়েছেন, ওসি নেই। এতে করে সেদিনের ঘটনা নিয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।