নিত্য ঘটমান উৎসবময় ঢাকার মঞ্চ চাঞ্চল্যের বিপরীতে মৌন মেরু উত্তরে মননশীলতার আলো ছড়াবার প্রত্যয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ নবগঠিত শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি সংগঠন 'উত্তরঙ'। ১৩ নভেম্বর শুক্রবার আয়োজন করে এক কবিতা সন্ধ্যার। "দেশপ্রেম ও দ্রোহের উচ্চারণ" অনুষ্ঠানটি শুরু হয় মাহবুবা কামাল বিনুর কন্ঠে মঙ্গলবারতা ও দেশপ্রেমের রবীন্দ্রসংগীত দিয়ে। দর্শক মাতিয়ে আরো গেয়েছেন সালাউদ্দীন ববি। নজরুলের 'বিদ্রোহী' আবৃত্তি করেন শামস আলদীন । শামসুর রাহমানের 'আসাদের শার্ট'-এর উচ্চকিত আবৃত্তি শোনান কাকলী আহমেদ ।
সন্ধ্যা মাতিয়ে নিজ কবিতা পাঠ করেন উপস্থিত কবিরা। কবি আবিদ আনোয়ার, রাজু আলাউদ্দিন, ইরাজ আহমেদ, শোয়াইব জিবরান, পিয়াস মজিদ, অনন্ত সূজন। দর্শক শ্রোতাকে কথার নদী আর আবেগ সমুদ্রে ভাসিয়ে আরো পাঠ করেন মঈন চৌধুরী, ফরিদ কবির, লুৎফুল হোসেন, কামরুল হাসান, রহিমা আফরোজ মুন্নী, লীনা ফেরদৌস।
অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থানে সংহতি জানানো হয় নিহত প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত ও চিকিৎসাধীন কবি ও প্রকাশক তারেক রহিম এবং আহমেদুর রশীদ টুটুলের কবিতা পাঠ করে।
সন্ধ্যার ঘোর লাগা ধুপ-ধোঁয়া, গাছ ও দালানের সখ্যতায় ছায়া আর আলোর মতোন কথার পিঠে বোনা ছিলো অযুত অনুভূতি। উত্তরাবাসী কবি ও শ্রোতা ছাড়াও এখানে উপস্থিত হন ঢাকার কবি ও শ্রোতারা। চেনা অচেনা মানুষের মাঝে চলে শত কথকতা।
অনুষ্ঠানের দ্যুতি বাড়ান অগ্রজ কবি হায়াৎ সাইফ, মুহম্মদ নূরুল হুদা ও রুবী রহমান তাঁদের পাঠ ও আলাপনে। উত্তরঙ-এর পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত অতিথি কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা ও রুবী রহমানকে সন্মাননা উপহার তুলে দেন উত্তরাবাসী কবি হায়াৎ সাইফ।
বোধের বিম্ব, কথার যাদুকর, ভাষার শুদ্ধতম সন্তান কবিদের জেগে ওঠার আহবান এ অনুষ্ঠানকে সাধুবাদ জানান উপস্থিত সবাই। বিপন্নতায়, সমূহ সংকটে, মা ও মৃত্তিকার কান্নায়, জীবনের জয়গানে 'উত্তরঙ'-এর এ উদ্যোগের পেছনের মানুষগুলোকে ধন্যবাদ দেন বিশেষ অতিথি এবং আমন্ত্রিত অভ্যাগতরা।
'উত্তরঙ' আগামীতে এমন আরো অনুষ্ঠান আয়োজনের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করবার পাশাপাশি তাদের পরবর্তী অনুষ্ঠান "মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্য – পাঠ ও আলাপন"-এর আমন্ত্রণ জানায় সবাইকে।