বাংলাদেশ সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে গিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের মন্দিরে পুজো দিয়ে বলেছেন, তার বহু দিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হল।
Published : 27 Mar 2021, 12:26 PM
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কাশিয়ানীতে মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ওড়াকান্দি মন্দিরে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাংসদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম এবং মতুয়া নেতৃবৃন্দ সেখানে তাকে স্বাগত জানান।
হেলিপ্যাড থেকে সরাসরি মতুয়া মতবাদের প্রবর্তক হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে যান মোদী। সেখানে তিনি পূজায় অংশ নেন এবং বিশেষ প্রার্থনা করেন। প্রার্থনা শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ওড়াকান্দি তীর্থ ঘুরে দেখেন।
পরে মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেন, “একভাবে এই স্থান ভারত ও বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্কের তীর্থস্থান। আজ শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আশীর্বাদের এই পূন্যভূমিতে প্রণাম করার সৌভাগ্য হয়েছে। আমি মাথা নত করে প্রণাম জানাচ্ছি।”
Blessed moments from Orakandi. pic.twitter.com/BYbP97adNF
— Narendra Modi (@narendramodi) March 27, 2021
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর, ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, গোপালগঞ্জ সদর আসনের এমপি শেখ ফজলুল করিম সেলিম, গোপালগঞ্জ-১ আসনের এমপি ফারুক খান, মতুয়া নেতৃবৃন্দ এবং ঠাকুর পরিবারের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মতুয়া মতবাদের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থান হল গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার ওড়াকান্দি। ওই গ্রমের মন্দিরটি পরিচিত মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছে সর্বোচ্চ মর্যাদার তীর্থস্থান হিসেবে।
ভারত-বাংলাদেশ মিলিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীর সংখ্যা পাঁচ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় তিন কোটির বসবাস পশ্চিমবঙ্গে।
ব্রাহ্মণ্যবাদ যাদের নিম্নবর্ণের অস্পৃশ্য জাত করে রেখেছিল, মূলত তারাই মতুয়া মতবাদের অনুসারী। তারা একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী; নারী ও পুরুষের সমান অধিকার এবং বিধবা বিবাহকে উৎসাহিত করা হয় এ মতবাদে।
Speaking at Orakandi. https://t.co/3ryP7Hucsi
— Narendra Modi (@narendramodi) March 27, 2021
মাতুয়া মতবাদের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুর তার অনুসারীদের কাছে নিপীড়িত ও অবহেলিত মানুষের মুক্তির দূত হিসাবে বিবেচিত।
১২১৮ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসের ত্রয়োদশী তিথিতে মহা বারুনীর দিনে কাশিয়ানী উপজেলার সাফলীডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হরিচাঁদ ঠাকুর। ১২৮৪ বঙ্গাব্দের একই দিনে তার মৃত্যু হয়। প্রতিবছর এই দিনে লাখো মতুয়া ওড়াকান্দির মন্দির প্রাঙ্গণে সমবেত হন, পুণ্যস্নানে অংশ নেন।
মূলত তিনিই সূচনা করেন মতুয়াবাদের, যা পরে বিস্তৃত হয় তার ছেলে গুরুচাঁদ ঠাকুরের হাত ধরে।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর মতুয়া অনুসারীদের একটি বড় অংশ ভারতে চলে যান এবং উত্তর ২৪ পরগণার ঠাকুরনগরে নিজেদের ধর্মীয় কেন্দ্র গড়ে তোলেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাইরে আসাম, ত্রিপুরা, উড়িষ্যা, উত্তরাখণ্ড, উত্তর প্রদেশ, ঝারখণ্ড, আন্দামান, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানাসহ বিভিন্ন প্রদেশে ভারত সরকার তাদের পুনর্বাসন করে।