ঝিনাইদহ শহর ও আশপাশের এলকায় ব্যাপকভাবে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে।
Published : 29 May 2018, 10:16 PM
প্রতিদিনই সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট্ট ডায়রিয়া ওয়ার্ডটিতে বেড, মেঝে, বারান্দা এমনকি রাস্তায় রোগী রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ওয়ার্ডে সিট আছে ছয়টি। সেখানে সোমবার রোগী ভর্তি ছিল ৬৭ জন। শৌচারগারগুলো থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সবকিছু মিলে একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সেখানে।
সদর উপজেলার ঘোড়শাল গ্রামের সখিনা বেগম বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে তার শিশু ছেলেকে দুদিন আগে হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। এখনও ভালো হয়নি। তাদের গ্রামে আরও শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তারা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের রোগী পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জানান, হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আসতে শুরু করে।
“প্রতিদিন আউটডোরে শ খানেক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আসছে। এদের মধ্যে যাদের অবস্থা খারাপ তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪৫ জনের মতো রোগীকে ভর্তি করা হচ্ছে। বাকিদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।”
হাসপাতালের নার্স শিমলা বলেন, “গতকাল (সোমবার) ৪১ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে নানা বয়সের রোগী রয়েছেন।”
ডায়রিয়া রোগীর চাপ অনেক বেড়ে যাওয়ায় তারা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। মেঝে, বারন্দা এমনকি রাস্তাতে রোগী রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আইয়ুব আলি বলেন, প্রতিদিন ৩৫-৪০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন মহল্লা থেকে আগত রোগীর সংখ্যা বেশি। বেডের অভাবে সামলানো সমস্যা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।
খোলা খাবার ও দুষিত পানি থেকে এ রোগ ছড়িয়েছে বলে তার ধারণা।
ঝিনাইদহ পৌরসভা মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, পৌরসভার কলাবাগান ও কাঞ্চনগর এলাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
“ওষুধ দিয়ে পৌরসভার পানির ট্যাংকগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। পানিবাহিত এ রোগ আর যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য পানি ফুটিয়ে পান করতে মাইকিং করা হচ্ছে।”
শুধু পৌরসভা নয় এর বাইরে থেকেও রোগী এসে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। মানুষকে বাসি পচা খাবার না খেতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
জেলার অন্য উপজেলা গুলো থেকে ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাবের কোনো খবর পাননি বলে জানান সিভিল সার্জন রাশেদা সুলতানা।