বাংলা লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী বারী সিদ্দিকীর স্বপ্ন ছিল তার বাউলবাড়িতে বাউলরা আসবেন, থাকবেন এবং গানের চর্চা করবেন।
Published : 24 Nov 2017, 04:21 PM
তার এ কাজ নিজে শেষ করে যেতে না পারলেও তা এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন সংস্কৃতিকর্মী, রাজনীতিবিদ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
নেত্রকোণা সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের কারলি গ্রামে প্রায় এক যুগ আগে ১২০ শতক জমিতে এই বাউলবাড়ির কাজ শুরু করেন তিনি।
এখানে পুকুরের উপর ঘর, একটি মসজিদ, বাউলদের থাকার জন্য ঘর, বাড়ির সীমানাপ্রাচীর করার পরিকল্পনা থাকলেও তিনি শেষ করতে পারেননি।
নেত্রকোণা সদর উপজেলার মৌগাতি ইউনিয়নের ফচিকা গ্রাম বারী সিদ্দিকীর জন্মস্থান। তার শ্বশুরবাড়ি কারলি গ্রামে। সেই সূত্রে কারলি গ্রামে শ্বশুর নূরুল হুদার বাড়ির পাশে তিনি এই বাউলবাড়ি নির্মাণ করেন। তবে সেই বাড়ির সংশ্লিষ্ট অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের কাজ অসমাপ্ত থেকে গেছে।
হৃদরোগ ছাড়াও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
বাউল বাড়ির দেখাশোনা করেন স্থানীয় মো. লিটন মিয়া।
চার মাস আগে বারী সিদ্দিকী সর্বশেষ বাউলবাড়িতে এসেছিলেন বলে জানান লিটন মিয়া।
এই বাড়ির আঙ্গিনায় কবর প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখানেই বারী সিদ্দিকীকে চির দিনের মতো সমাহিত করা হবে বলে তিনি জানান।
নেত্রকোণার সংস্কৃতি কর্মী অধ্যাপক তপন সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বারী সিদ্দিকী আমাদের নেত্রকোণার তথা দেশের সম্পদ। উচ্চাঙ্গ সংগীতের সাথে লোক সংগীতের মিশেলে যে ধারা করে গেছেন, তার জীবনভর সংগীত সাধনা সবকিছুই আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।”
তার দেখা স্বপ্নের বাউলবাড়িটির বাকি কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব এখন সংস্কৃতি কর্মী, শিল্পী সবার। সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
“তিনি বাউলবাড়িব কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। তার স্বপ্নের বাড়ি গড়ার বাকি কাজ এগিয়ে নিতে আমি সব ধরনের সহযোগিতা করব।”
মৃত্যুর খবর শুনে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল শুক্রবার দুপুরে ছুটে গেছেন যেখানে বারী সিদ্দিকীকে সমাহিত করা হবে সেই বাউলবাড়িতে।
ওই সময় অসীম কুমার উকিল বলেন, বারী সিদ্দিকীর অসম্পন্ন থাকা বাউলবাড়িটির কাজ শেষ করতে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
বাউলদের নিয়ে যে স্বপ্ন বারী সিদ্দিকী দেখতেন তা বস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।