মালদ্বীপের মডেলকন্যা রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী রাউধা আথিফ আত্মহত্যা করেছিলেন বলে মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
Published : 17 Oct 2017, 04:52 PM
রাজশাহীতে বিদেশি ছাত্রীর লাশ উদ্ধার
ময়নাতদন্ত শেষে বাবা-মায়ের কাছে রাউধার লাশ হস্তান্তর
রাউধার লাশ দাফন হলো রাজশাহীতেই
রাউধার মৃত্যু: ময়নাতদন্তে আত্মহত্যার উল্লেখ, সন্দেহ পরিবারের
রাউধার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে মালদ্বীপের ২ পুলিশ রাজশাহীতে
রাউধার মৃত্যু: কাশ্মিরি সহপাঠীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
রাউধা হত্যামামলা: সিআইডির তদন্ত শুরু
রাউধার লাশ পুনঃময়নাতদন্তের নির্দেশ
রাউধার কাশ্মিরি সহপাঠীর পাসপোর্ট জব্দ
আলামত গোপনের অভিযোগ রাউধার বাবার
রাউধা ‘হত্যা পরিকল্পিত’, অভিযোগ বাবার
রাউধার লাশ তোলা হলো ফের ময়নাতদন্তের জন্য
মঙ্গলবার রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় বলে জানান ওই আদালত পুলিশের পরিদর্শক আবুল হাশেম।
হাশেম জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক আসমাউল হক সোমবার সন্ধ্যায় তাদের কাছে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে তারা সেটি রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত-১ এ উপস্থাপন করেন বলে জানান হাশেম।
আবুল হাশেম জানান, মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি। রাউধাকে হত্যা করা হয়েছিল এমনটিও বলা হয়নি। তাই বাদীপক্ষের আইনজীবী এই প্রতিবেদনে নারাজি দিতে চান। এ জন্য তিনি বিচারক মাহবুবুর রহমানের কাছে সময় প্রার্থনা করেছেন।
“তবে এ বিষয়ে আদালত এখনও কোনো আদেশ দেয়নি।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আসমাউল হক বলেন, “দুই দফা ময়নাতদন্ত, ভিসেরা রিপোর্ট ও মোবাইল ফোন পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া গেছে, রাউধা আত্মহত্যাই করেছিলেন। এরপরই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।”
তিনি জানান, তদন্ত শেষে এবং প্রতিবেদন দাখিলের আগে এ বিষয়টি রাউধার বাবাকেও জানানো হয়েছে।
এর আগে দুই দফার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও মালদ্বীপের এই মডেল আত্মহত্যা করেছিলেন বলে বলা হয়েছিল।
আসমাউল হক বলেন, প্রেমে ব্যর্থ হয়েই রাউধা আত্মহত্যা করেছিলেন। মালদ্বীপের শাহী গণি নামে এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই যুবক পড়াশোনার জন্য লন্ডনে থাকেন।
“রাউধার হোয়াটসঅ্যাপ থেকে জানা গেছে, শাহীর সঙ্গে রাউধার সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল। এ নিয়ে প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন রাউধা। আত্মহত্যার আগের রাতেও শাহীর সঙ্গে রাউধার কথা হয়েছিল।”
রাউধার মৃত্যুর দিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ শাহমখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে। লাশের ময়নাতদন্তের পর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে রাজশাহীতে দাফন করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাউধা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এরপর মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে এসে ঘটনা তদন্ত করেন।
এদিকে রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটিও তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন।
তবে রাউধার বাবা মোহাম্মদ আথিফ এসব প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে গত ১০ এপ্রিল রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।
এ মামলায় রাউধার সহপাঠী ভারতের কাশ্মিরের মেয়ে সিরাত পারভীন মাহমুদকে একমাত্র আসামি করা হয়। কিন্তু সিরাতকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
গত ১৪ এপ্রিল হত্যা মামলাটি শাহমখদুম থানা থেকে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। এরপর কবর থেকে লাশ তুলে দ্বিতীয়বারের মতো রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। দ্বিতীয় দফার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেও রাউধা আত্মহত্যা করেছেন বলে বলা হয়।