পাবনা সুজানগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাইকে লাঞ্ছিত করায় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শামীম আদম লিটনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
Published : 30 May 2017, 04:08 PM
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সোমবার রাতে সুজানগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ে ঢুকে নতুন তালিকায় বাবার নাম অন্তর্ভূক্ত না করায় আব্দুল হাইকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে একটি কক্ষে আটকে রাখেন লিটন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের রোকন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
এদিকে লিটনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগ তুলে তার বহিষ্কারের খবরে স্বস্তি জানিয়েছে সুজানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
তাদের অভিযোগ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সুজানগর পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহাব গ্রুপের ‘আস্থাভাজন’ হওয়ায় লিটন সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে ঢাকা থেকে এই কমিটি পাশ করিয়ে আনার পর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব শুরু করেন।
লিটন তার অনুসারীদের কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করে সুজানগর উপজেলায় টেন্ডারবাজি, বালি মহালে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। সেইসঙ্গে তার গড়ে তোলা ‘লিটন বাহিনীর’ বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করলে লিটন তাদের
উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল সোহাগ বাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লিটনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্যে ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।
“লিটন কেবল টেন্ডারবাজি, মাদক ও বালিমহালে চাঁদাবাজি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি ঠিকভাবে পালন করা হয় না।”
উপজেলা ছাত্রলীগের স্কুল বিষয়ক সম্পাদক সোহেল রানা বাবু বলেন, “লিটনের বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করলে ধমকের সুরে বলতেন, ‘আমি যেভাবে যা বলি শুনতে হবে। টাকা খরচ করে এখানে এসেছি, ভাল না লাগলে চলে যাও’।”
এদিকে সুজানগর পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহাবের লোকজন হাইকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছেন বলে তার ভাই আব্দুল আলিম যতিন অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, “ছাত্রলীগ নেতা লিটনের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার পর থেকেই আমাদের ওপর নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। দুপুরে তাকে দিয়ে লাঞ্ছনার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে লিখে নেওয়ার জন্য পৌরসভা কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
“কী হবে বলতে পারছি না। আমরা সবাই নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি।”
এ বিষয়ে জানতে পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি তাদের চাপ প্রয়োগ করি নাই। ঝামেলা তৈরির জন্যেই এ ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।”
লিটনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এমন স্বাক্ষর দেওয়ায় মেয়রও কি তার সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “না আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম না। তখন আমার বয়স ছিল আট বছর। তবে তাকে আমি দেখেছি তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।”