নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নে ওরস ও বাউল গানের অনুষ্ঠান নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ।
Published : 16 Jan 2017, 06:37 PM
সোমবার রায়পুরা থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে বলে পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
সংঘর্ষের সময় নিহত মালয়েশিয়া প্রবাসী জালাল মিয়ার (২৮) লাশ ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রোববার বিকালে নিলক্ষার দুর্গম চর এলাকা সুটকিকান্দা গ্রামে খালেক শাহর মাজারে ওরস ও বাউল গানের আয়োজন নিয়ে ওই সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে একজন নিহত ও ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন।
নিলক্ষা ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের বিরোধের কারণে এর আগে দুপক্ষের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছিল। রোববারের সংঘর্ষেও এ দুই চেয়াম্যানের বিরোধের বিষয় জড়িত বলে পুলিশের ভাষ্য।
এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় রায়পুরার সহকারী কমিশনার (ভুমি) হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে ওরস অনুষ্ঠান ও বাউল গান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এ সময় গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এ সময় পুলিশ গুলি চালায় বলে পরিদর্শক মাজহারুল জানান।
তবে পুলিশের গুলিতে জালালের মৃত্যু হয়েছে কি না তা জানাতে পারেননি তিনি।
সোমবার সকালে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। পরে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মাজহারুল ইসলাম আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিলক্ষা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম সমর্থকদের সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হক সরকারের সমর্থকদের বিরোধ ও মামলা চলে আসছে। এর জেরে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুরসহ বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে।
এ কারণে প্রশাসন ওরস ও বাউল গান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। স্থানীয় দুটি প্রভাবশালী গ্রুপের মধ্যে চলমান এ বিরোধে নিরীহ গ্রামবাসীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বলেন মাজহারুল।
এ ঘটনায় গ্রামের ১৪০ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় পুলিশ মামলা করেছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
নিহত জালালের মা সাফিয়া খাতুনের (৫৮) দাবি, পুলিশের গুলিতে তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
গত ১৪ নভেম্বর ও ১৮ ডিসেম্বর নিলক্ষা ইউনিয়নের ওই দুই চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যে ১৪ নভেম্বরের সংঘর্ষের চারজন নিহত হন। আগুন দেওয়া হয় ছয়টি বাড়িতে। পরের ঘটনায় অন্তত ১৫ জন টেটাবিদ্ধ হন।
এরপর ২৫ ডিসেম্বর এই দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ফের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হন।