শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে বিসিবির মালামাল ও লোকবল প্রত্যাহার

মালামাল ও জনবল গুটিয়ে নেওয়ার কারণ জানেন না বলে দাবি ভেন্যু ম্যানেজারের।

বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে লোকবলসহ সব মালামাল গুটিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

বৃহস্পতিবার ওই স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল বিষয়টি জানান।  

তবে কেন গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।

এর আগে বুধবার দুপুরে ভেন্যুর লোকজনকে বগুড়া থেকে চলে আসার বার্তা দেওয়া হয় জামিলুর রহমানকে।

 তিনি জানান, মোবাইলে ফোনে নির্দেশ দেওয়া হয়, শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে থাকা বিসিবির সব মালামাল ঢাকাস্থ মিরপুর স্টেডিয়ামে পাঠিয়ে দিতে। একইসঙ্গে বগুড়ায় কর্মরত বিসিবির ১৭ জনকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ঢাকায় রিপোর্ট করতে বলা হয়।

যার মধ্যে ভেন্যু ম্যানেজার ছাড়াও আছেন কিউরেটর, সুপারভাইজার, অফিস সহকারী, নৈশ প্রহরী। 

“নির্দেশ অনুযায়ী স্টেডিয়াম থেকে বিসিবির দেওয়া খেলার সব সরঞ্জাম, ফার্নিচার বের করা হয়েছে। সেগুলো কাভার্ড ভ্যানে উঠিয়ে আজ সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশে পাঠানো হবে।”

জামিলুর রহমান আরও বলেন, “আমাদের বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। ধারণা করছি, বগুড়া থেকে ভেন্যু তুলে নেবে বিসিবি। 

এ ভেন্যু কর্মকর্তা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ওয়াই সি এল এর চারদিনের ম্যাচ ছিল শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে। 

এ বিষয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও বগুড়ার ডিসি মো. সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো সমস্যা থাকলে বিসিবি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হিসেবে আমাকে জানাতে পারত। কিন্তু উনারা আমাকে জানাননি। যখন চিঠি দেখলাম, আমি বিস্মিত! আমি জানলামই না অথচ জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতি অভিযোগ?” 

ডিসি সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, “কেন এমন হলো? আমাকে সময় দেওয়া হোক, সব কিছু ঠিক করবো। আমাকে সভাপতি হিসেবে জানানো হয়নি। আমি বিসিবির সিদ্ধান্তের জবাব দিব। অন্তত বগুড়ার ভেন্যু প্রত্যাহার না করা হোক।”

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাছুদুর রহমান মিলন বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৬ বছর হলো মাঠটি বিসিবি পরিত্যক্ত রেখেছিল। কোনো খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি এখানে। কোনো অজুহাতে তারা মাঠটি বর্জন করতে চায়, এটাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। তারা তাই করল।”

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে ২১ কোটি টাকায় বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে একটি আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে (ফ্লাড-লাইটসহ) উন্নীত করা হয়। এ মাঠে আগে থেকেই ভালো মানের পাঁচটি উইকেট (পিচ) রয়েছে। 

ওই বছর অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট হয় এখানে। পরে আইসিসি থেকে ওয়ান ডে এবং টেস্ট খেলার মর্যাদা পায় ভেন্যুটি। এখানে বাংলাদেশ- শ্রীলংকা টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়।

এরপর ২০০৬ সালের ৩০ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে ঘোষণা করে।

একই বছরে স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিক টেস্ট ভেন্যুর স্বীকৃতিও পায়। ওই সময় বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ওয়ান ডে ম্যাচ হয় এই স্টেডিয়ামে। 

কিন্তু অজানা কারণে ২০০৬ সালের পর থেকে এ মাঠে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে কোনো খেলা উপভোগ করা দর্শকদের ভাগ্যে জোটেনি।

তবে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় লিগ, স্থানীয় প্রিমিয়ার ডিভিশন, প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ ও করপোরেট লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব ম্যাচের সবগুলোই দিনে অনুষ্ঠিত হয়।