নয় বছরের শাসনামলে এইচ এম এরশাদ মানুষের মন জয় করেছিলেন দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দেশের মানুষ ‘অনেক প্রত্যাশা নিয়ে’ এখনও তাদের পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে।
Published : 15 Jul 2020, 12:05 AM
এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, “দেশের মানুষ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে এখনও জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। দেশের মানুষ এখনও জাতীয় পার্টির ওপরে আস্থা রাখে। দেশের মানুষ এখনো বিশ্বাস করে, জাতীয় পার্টিকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হলে তা বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা রাখে।”
এইচ এম এরশাদ ‘নানা কর্মসূচি, উন্নয়ন ও সাফল্য দিয়ে’ মানুষের অন্তর জয় করেছিলেন বলে দাবি করেন তার ছোট ভাই কাদের।
“তাই জাতীয় পার্টি দেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার দলে পরিণত হয়েছে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় এক নেতা।”
সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা কাদের বলেন, “আমরা তার আদর্শ অনুসরণ করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব। পল্লীবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করে সুখী-সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছি আমরা।”
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত-সমালোচিত এরশাদ সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় আশির দশকে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে আট বছর দেশ শাসন করে ১৯৯০ সালে গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের আগের সরকারে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালনকারী এরশাদ বর্তমান সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্বে ছিলেন। গতবছর ১৪ জুলই তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অধ্যায়ের অবসান ঘটে।
এরশাদকে ‘আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার’ হিসেবে বর্ণনা করে জি এম কাদের বলেন, “হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিচার ব্যবস্থায় অসাধারণ উন্নয়ন সাধন করেছিলেন। পল্লীবন্ধু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছিলেন।”
দুঃসময়েও পাঁচটি সংসদীয় আসনে নির্বাচিত হয়ে এরশাদ তার জনপ্রিয়তা দেখিয়ে গেছেন বলেও মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, “আবার যখন তিনটি আসনে নির্বাচনের বিধান এল, তখনও তিনটি আসনেই বিজয়ী হয়ে অনন্য রেকর্ড গড়েছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আর মৃত্যুর পরে পল্লীবন্ধুর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল তার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা প্রমাণ করে।”
এরশাদের আদর্শে জাতীয় পার্টি এখন ‘আরও শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ এবং সুসংহত’ বলে দাবি করেন কাদের।
সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেন, “বেহায়া নির্বাচন কমিশন পল্লীবন্ধুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে উপ-নির্বাচন করে মানুষের অন্তরে আঘাত দিয়েছে। পল্লীবন্ধু এরশাদ শুধু সাবেক রাষ্ট্রপতিই নন, বর্তমান সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। পল্লীবন্ধুর প্রতি অসম্মান দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন সঠিক কাজ করেনি।”
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারে না। শিশুরাও বেলা ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে আগাম বলে দিতে পারে নির্বাচনের ফলাফল।”
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় কেলেঙ্কারি এবং গরিবের চাল চুরির সাথে যারা জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ।
আলোচনা সভা শেষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্বারী হাবিবুল্লাহ বেলালী।
দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান মিয়া, জহিরুল ইসলাম জহিরসহ আরও অনেকে এসময় উপস্থিত ছিলেন।