হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের আট কোটি ডলারের বেশি হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরকে দায়ী করে তাদের পদত্যাগ চেয়েছে বিএনপি।
Published : 11 Mar 2016, 05:46 PM
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “দেশের অর্থনীতিকে রাবিশে পরিণত করার জন্য অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর দায়ী।
“৮০০ কোটি টাকা হ্যাক হয়ে যাওয়ার পর এখনও তারা দায়িত্ব পালন করছে কোন অধিকারে? বিএনপি অবিলম্বে অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ‘অর্থ লোপাটকারীদের’ চিহ্নিত করে তাদের বিচারের দাবি জানান রিজভী।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঞ্চিত অর্থ লোপাটের ঘটনা গত মাসে ঘটলেও তা গত সপ্তাহে ফিলিফিন্সের একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
ডেইলি ইনকোয়ারার বলেছে, সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ সরানো হয় ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার ব্যাংকে।
শ্রীলঙ্কায় যাওয়া দুই কোটি ডলার মাঝপথে আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের পাঁচটি অ্যাকাউন্টে নেওয়া ৮ কোটি ডলার ক্যাসিনো হয়ে হংকংয়ে পাচার হয়ে গেছে বলে পত্রিকাটির খবর।
রিজভী বলেন, “এটি ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যক্কারজনক জালিয়াতির ঘটনা। সরকারের লোক জড়িত না হলে এতবড় জালিয়াতির ঘটনা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে দেশবাসী বিশ্বাস করে।
“আশ্চর্য্য হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা এখন উড়ছে ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে।”
বিগত সময়ে পুঁজিবাজার, ডেসটিনিসহ আর্থিক খাতের বিভিন্ন কেলেংকারিতে ‘সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও শাসকদলের নেতৃবৃন্দসহ রাঘব বোয়ালদের’ নাম উঠে এলেও তাদের বিচার না হওয়ায় লুটপাট বেড়ে চলেছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ নেতৃবৃন্দ, যারা গত তিন বছরে সরকারি কাজের বাইরে ঠুনকো অজুহাতে সিঙ্গাপুর,ব্যাংকক, হংকং, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, দুবাই ভ্রমণ করেছেন, তাদের পাসপোর্ট যাচাই করে অনুসন্ধান করলেই এই আন্তর্জাতিক জালিয়াত চক্রের রাঘব বোয়ালদের সংশ্রব বেরিয়ে আসবে।”
ব্যাংক ডাকাতি ও এটিএম কার্ড নকল করে অর্থ লুটের ঘটনার পর মানুষ এখন আর ব্যাংকে টাকা রাখতে সাহস পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।